রায় না হলে জামায়াতের বিষয়ে কিছু করতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:০১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করার জন্য ইতোমধ্যে কোর্টে একটি মামলা রয়ে গেছে। সেই মামলার রায় যতক্ষণ পর্যন্ত না হবে ততক্ষণ বোধহয় আমরা কোনোকিছু করতে পারি না। কোর্টের রায় খুব শীঘ্রই যদি হয়ে যায় তাহলে জামায়াত দল হিসাবে নিষিদ্ধ হবে।
বুধবার বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ১ম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তরে এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী সম্পূরক প্রশ্ন করেন।
তিনি বলেন, ‘জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের কেসও চলমান রয়েছে। তাদেরকে সরকারিভাবে চিরতরে নিষিদ্ধ করা একই সাথে সাথে তাদের অবৈধ সম্পত্তির জামানত বাজেয়াপ্ত করা এবং তারেক জিয়াসহ বিদেশে পলাতকদের ফেরত আনতে সরকার কোন উদ্যোগে গ্রহণ করবে কি না?’
এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধী। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল এবং এদেশে গণহত্যা থেকে চালানো শুরু কর নারী ধর্ষণ লুটপাট, অগ্নিসংযোগ নানা ধরনের অপরাধ করেছিল। সেই অপরাধের বিচার স্বাধীনতার পর জাতির পিতা শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫’র ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যার পর যখন জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতা দখল করে সেই বিচার কার্য বন্ধ করে দেয় এবং তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয়। ভোটের অধিকার দেয়। যেটা আমাদের সংবিধানে ছিল না। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে দেওয়া হয় এবং ৩৮ অনুচ্ছেদের আংশিক সংশোধন করে এদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যা হোক, এখন তাদের বিরুদ্ধে জনমত এমনভাবে সৃষ্টি হয়েছে, জামায়াতকে এ দেশের মানুষ প্রত্যাখান করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য যে নিবন্ধন লাগে নির্বাচন কমিশনে এবং তার যে শর্তগুলি সেগুলি তারা পূরণ করতে পারেনি বলে তাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়নি। কিন্তু তাদের নিষিদ্ধ করবার জন্য ইতোমধ্যে কোর্টে একটি মামলা রয়ে গেছে। সেই মামলার রায়টা যতক্ষণ পর্যন্ত না হবে সেখানে বোধহয় আমরা কোনকিছু করতে পারি না। আমি আশা করি, কোর্টের রায় খুব শীঘ্রই যদি হয়ে যায় তাহলে জামায়াত দল হিসাবে তারা নিষিদ্ধ হবে।
‘তবে এটা ন্যাক্কারজনক; যেখানে তারা নিবন্ধিত না সেই অবস্থাতেও তারা কিন্তু নিজেদের জামায়াতে ইসলামীর নামে বিএনপির সাথে একযোগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জোটবদ্ধ হয়ে তারা ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ জানাই; তারা তাদেরকে ভোট দেয়নি, সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখান করেছে।
‘যারা অপরাধী, মানুষ খুন করা থেকে মানি লন্ডারিং, দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ; সহ এই সমস্ত মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত, যারা গ্রেফতারকৃত; কিন্তু যারা বিদেশে পলায়ন করে আছে, তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য ইতোমধ্যে আমাদের আলোচনা চলছে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা তাদেরকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে পারবো।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশেনের দিনের কার্যসূচি শুরু হয়।
সারাবাংলা/এনআর/একে