দুদকের মানিলন্ডারিং মামলায় সাজার হার শতভাগ: ইকবাল মাহমুদ
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:৪০
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়েরকৃত মানিল্ডারিং মামলায় সাজার হার শতভাগ বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ
বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে ইউ.এস. ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্টেট অব কোর্টস (স্ট্রেংথেনিং অফ ল’ প্রোগ্রাম) এর টেকনিক্যাল ডিরেক্টর রবার্ট লকারি এর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদক চেয়ারম্যানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলে তিনি এ কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদকের দায়েরকৃত মানিলন্ডারিং মামলায় সাজার হার শতভাগ। বিদ্যমান আইন অনুসারে মানিলন্ডারিং মামলা পরিচালনার একক দায়িত্ব দুদকের নেই। বর্তমানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পুলিশের সিআইডি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ একাধিক সংস্থা মানিলন্ডারিং মামলা পরিচালনা করছে। দুদক কেবল ঘুষ ও দুর্নীতিসম্পৃক্ত মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ তদন্তের ক্ষমতাপ্রাপ্ত। বাকি ২৬টি অপরাধ সংশ্লিষ্ট মানিলন্ডারিংয়ের তদন্ত অন্যান্য সংস্থাসমূহের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
অর্থপাচার সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে শুধু সন্ত্রাসে অর্থায়ন হয় না, বরং দেশের ক্যাপিটাল ফ্লাইংও হচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুদক চেয়ারম্যানকে জানান, তদন্ত এবং প্রসিকিউসন বিচারের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তদন্তকারীরা যে সকল সাক্ষ্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করবেন, তার সাক্ষ্যপ্রমাণ বিবেচনা করে বিশ্লেষণ করবেন প্রসিকিউটররা। অর্থাৎ তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং বিচারক অপরাধ দমনে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। আর অপরাধ দমনে কার্যকর তদন্ত ও প্রসিকিউসনের প্রয়োজন।
এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের তদন্ত ও প্রসিকিউসনের সক্ষমতা হয়তো এখনও কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। তবে, দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটরদের সক্ষমতা আরো বাড়ানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। শুধু দুদক নয় সরকারের কোনো স্থায়ী প্রসিকিউটর নেই। তারপরও দুদক প্রসিকিউটরদের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য কমিশন অনুমোদিত নীতিমালার আলোকে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এ সময় দুদক চেয়ারম্যান বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউটর এবং সংশ্লিষ্ট বিচারকদের প্রশিক্ষণের আহ্বান জানিয়ে প্রতিনিধি দলের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু আমেরিকায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে তা নয়, বরং আপনারা আপনাদের এসকল ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যক্তিদের বাংলাদেশে এনে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করতে পারেন। কমিশনের কোনো আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই, আমাদের প্রয়োজন জ্ঞানের, যার মাধ্যমে আমরা পদ্ধতিগত উন্নয়ন ঘটাতে পারি। আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দেশি-বিদেশি জ্ঞানের মিশ্রণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত উন্নয়নের মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়।
চেয়ারম্যান আরও বলেন, ছোট ছোট দুর্নীতি অঙ্কুরেই বিনাশ করা গেলে, বড় বড় দুর্নীতির পথ সঙ্কুচিত হয়ে আসে। তা না হলে এই ছোট ছোট দুর্নীতি একসময় দুর্নীতির মহিরুহে পরিণত হয়, যা সমাজকে বিপন্ন করে ফেলে এবং তা উপরে ফেলাও দুরহ।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদকের মহাপরিচালক (লিগ্যাল) মোঃ মঈদুল ইসলামসহ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
সারাবাংলা/এসজে/জেএএম