ইজতেমা নিয়ে কেউ অপপ্রচার চালালে কঠোর ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:১৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
টঙ্গী থেকে: বিশ্ব ইজতেমায় যেন কোনো বিশৃ্ঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকস সদস্যরা তৎপর থাকবেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে তাবলিদের মুরব্বিদের দুই পক্ষের মধ্যে যে বিরোধ ছিল, তা মিটে গেছে। এখন যদি কেউ বিশৃঙ্খলা বা অপপ্রচারের চেষ্টা করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টঙ্গীর পৌরসভা মাঠে ‘বিশ্ব ইজতেমা-২০১৯’ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত ফলোআপ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তাবলিগের সা’দপন্থী ও সা’দবিরোধী—উভয়পক্ষের মুরব্বিদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইজতেমায় যে দল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, তাদের জবাবদিহি করতে হবে। সুতরাং আপনারা খেয়াল রাখবেন, আপনাদের কোনো সদস্য যেন গুজব ছড়াতে না পারে কিংবা অপ্রচারমূলক ভিডিও না প্রকাশ করে।’
আরও পড়ুন- ইজতেমার প্রতি ইঞ্চি জায়গা সিসিটিভির আওতায় থাকবে: আইজিপি
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাগলিগের দুই পক্ষের মতবিরোধ বিষয়ে বিস্তারিত শোনেন এবং ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানে পানি, বিদ্যুৎ, বিআরটিএ, ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ১৫ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ৪ দিন বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে কারা আগে ঢুকবেন এবং কারা পরে ঢুকবেন, সেটি আপনারা ঠিক করে আমাদের জানাবেন। কারণ ইতোমধ্য যে দশ শর্ত ছিল, যে সমঝোতা চুক্তি করেছেন, তা আপনারা মেনে নিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইজতেমার কারণে ১৬, ১৭ ও ১৮ তারিখের পরীক্ষা পেছাল
উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) অনুষ্ঠিত সভায় ১০ শর্ত মেনে ইজতেমা ময়দানের প্রস্তুতি কাজ শুরু করেছেন তাবলিগের মুরব্বিরা। এই শর্তগুলো হলো—
১। আগামী ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা ইজতেমা শু’রু করে ১৭ ফেব্রুয়ারি ফজরের পর আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ করে চলে যাবেন।
২। মাওলানা সা’দ অনুসারীরা ১৭ ফেব্রুয়ারি জোহরের নামাজের পর ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করবেন। ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি সা’দপন্থী ওয়াসিফুল ইসলাম অনুসারীরা ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করে তাদের দুই দিনের ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
৩। মাওলানা জোবায়ের অনুসারীরা বুধবার থেকে ইজতেমা মাঠ প্রস্তুতি কাজ শুরু করবেন।
৪। মাওলানা জোবায়েরপন্থীরা ১৭ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাত শেষ করে মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন।
৫। জোবায়েরপন্থী লোকজন প্রশাসনের উপস্থিতিতে সা’দপন্থীদের কাছে মাঠ বুঝিয়ে দেবেন।
৬। দুই পক্ষের ইজতেমা শেষে ইজতেমা মাঠের প্রস্তুতি কাজে লাগানো সরঞ্জাম বিষয়ে দুই পক্ষের মুরুব্বিরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।
৭। ইজতেমা শেষে ময়দানে মুসল্লিদের ব্যক্তিগত সরঞ্জাম ছাড়া বাকি সব মালামাল স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বে থাকবে।
৮। মাওলানা জোবায়ের অনুসারী বিদেশি মেহমানরা দুই দিন ইজতেমা শেষে উত্তরা হাজী ক্যাম্পে অবস্থান করবেন।
৯। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা সা’দ বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেবেন না।
১০। ইজতেমা চলার সময় উভয়পক্ষের অনুসারী মুসল্লিরা টঙ্গীর আশপাশ এলাকার মসজিদে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবেন।
সারাবাংলা/এসএইচ/এমএনএইচ