Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর: চট্টগ্রামে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু


১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৯:৩১

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে ‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তরের দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের ছাত্র ফোরামের ব্যানারে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা এই কর্মসূচি শুরু করেছেন।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন ‘অমর একুশে বইমেলার’ প্রধান ফটকে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ সাংবাদিক পংকজ কুমার দস্তিদার।

উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই পাকিস্তানি সেনারা এই সার্কিট হাউজকে তাদের ক্যাম্প বানিয়ে ফেলে। সেটি ছিল পাকিস্তানি সামরিক জান্তার দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে কত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিকামী সাধারণ বাঙালিদের ধরে সেই ক্যাম্পে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছিল, তার কোনো হিসেব নেই। কিন্তু জিয়াউর রহমানের এখানে তেমন কোনো স্মৃতি নেই। তার নামে এই জাদুঘর হওয়াতে চট্টগ্রামের মানুষের তা প্রত্যাখান করেছেন। এখানে এখন আর দর্শনার্থী আসেন না।

তিনি বলেন, এই ভবনকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর করা হলে সর্বস্তরের মানুষের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার সুযোগ হবে এবং বিপুল দর্শনার্থীর সমাগম হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহসম্পাদক রাহুল দাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘উদ্বোধনের পরই স্বাক্ষর দেওয়ার জন্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। ৫০ হাজার স্বাক্ষর নেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের আছে। আমরা এই দাবিকে চট্টগ্রামবাসীর গণদাবিতে রূপান্তর করতে চাই।’

বিজ্ঞাপন

গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল জিয়া স্মৃতি জাদুঘরকে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তরের প্রস্তাব তোলেন।

এতে সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহার উশৈসিং এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ।

১৯১৩ সালে চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউড়ি এলাকায় তৎকালীন বৃটিশ শাসকরা দৃষ্টিনন্দন ভবনটি নির্মাণ করে, যা পরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ হিসেবে রাষ্ট্রীয় অতিথিদের জন্য ব্যবহৃত হতো।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সফরে এসে সার্কিট হাউজের চার নম্বর কক্ষে উঠেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ভোরের দিকে এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি নিহত হন। ওই বছরের ৩ জুন সার্কিট হাউসকে একটি জাদুঘরে রূপান্তরের জন্য সরকারি প্রস্তাব গৃহীত হয়।

এরপর ১৯৯১ সালে জিয়াউর রহমান স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে। ১৯৯৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সেই জাদুঘরের উদ্বোধন করা হয়। জাদুঘরে জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের নমুনা, ব্যক্তিগত সামগ্রী এবং স্বাধীনতা ঘোষণার ট্রান্সমিটারটি সংরক্ষিত আছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আব্দুর রহিম শামীমের সভাপতিত্বে এবং রাহুল দাশের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন নগর ছাত্রলীগের কার্যকরী সদস্য মোশরাফুল হক পাবেল, ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সৈকত বর্মণ, জাহিদুল ইসলাম প্রমি, এস.এম আলামিন বাবু, আমিন আল মাহমুদ নাঈম, ইফতেখার আবির, সুজা-উদ-দৌলা চৌধুরী সুজন, তোফায়েল হোসেন তুহিন, মোমিনুল হক সুমন এবং সৈকত দাশ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর