৫ শতাংশ প্রণোদনার দাবি বিজিএমইএ’র
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৩
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগামী দুই বছরের জন্য পোশাক খাতে ৫ শতাংশ প্রণোদনা দেয়ার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। একই সঙ্গে খাতটিকে ভ্যাট মুক্ত রাখার ও ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হারে সিঙ্গেল ডিজিট দ্রুত কার্যকরের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসা পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ী মন্ত্রী ও এমপিদের সংবর্ধনা দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের সংসদে ১৭ জনের বেশি পোশাক রফতানিকারক সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা রফতানির আয়ের ৮৩ শতাংশ কন্ট্রিবিউট করি। সম্প্রতি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে। আমাদের এ খাতে কমপক্ষে আগামী দুই বছর প্রণোদনা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা ভ্যাট মুক্ত থাকতে চাই। পৃথিবীর কোন দেশে রফতানিমুখী শিল্পে ভ্যাট নেই।
পোশাক খাতের এই নেতা আরও বলেন, আমাদের বিভিন্ন সমস্যা আছে, সিঙ্গেল ডিজিটে (১০ শতাংশের নিচে) ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এটা এখনও কার্যকর হচ্ছেনা। বরং বিভিন্ন চার্জ দিতে গিয়ে ২ শতাংশ বেশি দিতে হয়। দ্রুত ১০ শতাংশের নিচে সুদে যেন ঋণ দেয়া হয় সে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই।
সিদ্দিকুর আরও বলেন, আমাদের পোশাক শিল্প মালিকদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ সেক্টরকে রক্ষা করতে হবে। তৈরি পোশাক রফতানিতে আমরা দ্বিতীয় হলেও আন্তর্জাতিক মার্কেটের শেয়ার আমাদের মাত্র ৬ শতাংশ । এটা ১৫ শতাংশ নিয়ে যেতে চাই এর জন্য আমাদের সরকারকে সহায়তা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পোশাক শিল্পে আমার ব্যবসা ৩৩ বছরের। খাতটি নিয়ে আমার অবস্থান আগের মতোই থাকবে। মন্ত্রী হওয়ায় এটা বদলাবে না। এ সেক্টরের সমস্যা সমাধানে আমি নিরন্তর কাজ করে যাবো।
ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন সূচকের (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) উন্নতিই সরকারের প্রথম অগ্রাধিকার বলেও উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, গত দশ বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে পরবর্তী স্তরে যেতে আমাদের আরও বেশি খাটুনি করতে হবে। গত দশ বছরে যা অর্জন তার মূল চালিকা শক্তি বেসরকারি খাত ছিল এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন। এটা তার মন্ত্রী পরিষদ দেখেই বোঝা যায়। অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী , পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী, স্বাস্থ্য, ভূমী, এলজিইডি মন্ত্রী সবাই ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, এই সুযোগে আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) দাবি না আদায় করতে পারলে এটা আপনাদের ব্যর্থতা।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, তার মন্ত্রণালয়ের অধীনে পোশাক খাতের জন্য করণীয় যা কিছু আছে তা তিনি অবশ্যই করবেন।
উপস্থিত মন্ত্রী ও সংসদদের উদ্দেশ্যে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, আগে যেভাবে দেখেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ট্রেড ও ইনভেস্টকে সেভাবে দেখবেন। এ সেক্টরের সমস্যাকে নিজের মনে করবেন।
বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, এই শিল্প অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এরপরও গত ১০ বছরে ৩২০ শতাংশ বেতন বাড়িয়েছে। আমার পক্ষ থেকে এ শিল্পের জন্য যেটা বলা প্রয়োজন সেটা আমি সংসদে বলবো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী-৩ আসন থেকে নির্বাচিত জহিরুল হক ভূঁইয়া মোহন, সিলেট-৩ আসনের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কায়েস, সিরাজগঞ্জ-৫ থেকে নির্বাচিত আব্দুল মমিন মন্ডল, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী আতিকৃল ইসলাম, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান সিনহা, বিজিএমইএ সহ সভাপতি মো. নাছিরসহ সংগঠনটির অন্যান্য নেতারা।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আরএ