অনুমোদন পেলো আরও ৩ ব্যাংক
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:৪৭
।। গোলাম সামদানী,. স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বেসরকারি খাতে নতুন করে আরও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক তিনটি হলো: বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক ও পিপলস ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী বোর্ড সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন (লেটার অব ইনট্যান্ট) দেওয়া হবে। একইসঙ্গে সভায় সব ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা করার কথা বলা হয়েছে। রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলাদেশে ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের জরুরি সভায় তিনটি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যেসব ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকার কম আছে, সেগুলোকে আগামী দুই বছরের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলো দুই বছর সময় পাবে।’
এদিকে, নতুন অনুমোদন পাওয়া বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জসীম উদ্দিন। তিনি বেঙ্গল গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়া ব্যাংকটির পরিচালক হিসেবে রয়েছেন জসীম উদ্দিনে ভাই আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোর্শেদ আলম। সিটিজেন ব্যাংকের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মা জাহানারা হক। আর পিপলস ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নাম প্রস্তাব করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এমএ কাশেম।
এর আগে, গত বছরের ২৯ অক্টোবর পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবু ফরাহ মো. নাসের বলেন, ‘নতুন এই তিন ব্যাংককে চূড়ান্তভাবে অনুমোদন পেতে কিছু শর্ত পালন করতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা করতে হবে। ‘ তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি বড় হয়েছে, জিডিপি বেড়েছে তাই ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন হবে ৫০০ কোটি টাকা। আগে এটি ছিল ৪০০ কোটি টাকা। এরপর আবার আবেদন করলে পরবর্তী বোর্ড সভায় লেটার অব ইনট্যান্ট দেওয়া হবে। লেটার অব ইনট্যান্ট পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে মূল লাইসেন্স পেলে কার্যক্রমে যেতে পারবে। এছাড়া আমানতকারীদের স্বার্থ দেখার বিষয়টিতেও নজর দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।
বিধি মোতাবেক, ১০ লাখ টাকা আবেদন ফি দিয়ে নতুন ব্যাংকের জন্য পরিশোধিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা। এখন এটি ৫০০ কোটি টাকা করা হলো। অর্থাৎ উদ্যোক্তাদের ৫০০ কোটি টাকা জোগান দিয়ে নতুন ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে। বর্তমানে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা ৫৯। এর মধ্যে ৪১টি বেসরকারি খাতের, ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও ৯টি বিদেশি মালিকানার ব্যাংক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নতুন তিনটি ক্যাংক যথাক্রমে বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেন ব্যাংক ও পিপলস ব্যাংক এই তিনটি ব্যাংক অনুমোদন দেওয়ার ফলে বর্তমানে দেশে মোট ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬২টি।
টানা তিন মেয়াদ ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম মেয়াদে ২০০৯ সালে নয়টি নতুন ব্যাংকের অনুমোদন দেয়। পরবর্তী সময়ে ‘সীমান্ত ব্যাংক’ নামের আরেকটি ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
সর্বশেষ গত জুলাই মাসে বিশেষায়িত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে বাণিজ্যিক লেনদেনের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন ব্যাংকগুলোর মধ্যে ফারমার্স ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা খুবই নাজুক।
সারাবাংলা/জিএস/এমএনএইচ