‘আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণ পুনর্বাসন পর্যন্ত পাশে থাকবে সরকার’
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:১০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চকবাজার থেকে: চকবাজারের ওয়াহিদ ম্যানসনসহ আশপাশের ভবনগুলোতে আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পুরোপুরি পুনর্বাসন না হওয়া পর্যন্ত সরকার তাদের পাশে থাকবে।
আরও পড়ুন- চকবাজারে ফের আগুনের ধোঁয়া, আতঙ্ক
বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চকবাজারে আগুনে পুড়ে যাওয়া ওয়াহিদ ম্যানসনসহ আশপাশের এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল রাতের এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে তদারকি করেছেন। তিনি আমাকেও নির্দেশনা দিয়েছেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনের জন্য।
এর আগে ২০১০ সালেও পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগলে শতাধিক ব্যক্তি মারা যান। ওই সময় বলা হয়েছিল, এই এলাকায় এ ধরনের কোনো কেমিক্যালের গোডাউন রাখা হবে না, যেগুলো আছে সরিয়ে নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, কেমিক্যালের গোডাউন অবশ্যই ছিল। সে কারণেই আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
চকবাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের কাজের প্রশংসা করে সরকারের এই সেতুমন্ত্রী বলেন, আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিস তড়িৎ ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে আগুন দ্রুত নেভানো সম্ভব হয়েছে। এ কারণে এত বড় আগুনেও যতটা ক্ষতি হওয়ার কথা ছিল, ততটা ক্ষতি হয়নি। এ কারণে ফায়ার সার্ভিসকে ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিসের যে আধুনিকায়ন করেছেন, সে কারণেই ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে এত দ্রুত কাজ করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন- মর্গ উপচে লাশের সারি বারান্দায়, ব্যাগের ছাইয়ে প্রিয়জনের খোঁজ
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন উদ্যোগ নিলে পুরান ঢাকা থেকে সব কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে নেওয়া হবে। এক কাজে মেয়রকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামও চকবাজার পরিদর্শনে আসেন। তিনি বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তা সবার আগে দেখতে হবে। সেক্ষেত্রে আবাসিক এলাকায় যেন কেমিক্যাল গোডাউন না থাকে, সেদিকে ব্যবসায়ীদের খেয়াল রাখতে হবে। এরপরও গোডাউন রাখতে হলে নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেই রাখতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে আগুন লাগে চকবাজারের ওয়াহেদ ম্যানসনে। ওই ভবনে থাকা কেমিক্যালের গোডাউন থাকার কারণেই মূলত আশপাশের ভবনগুলোতে আগুন ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া দগ্ধ আরও ৪১ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন তাদের ‘আওতাধীন’ রয়েছে, এখনই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলা যাবে না।
এদিকে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন) মেজর শাকিল নেওয়াজ প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, এখন পর্যন্ত ৭০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত আরও ৪১ জনকেও পাঠানো হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আমরা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছি। উদ্ধার অভিযান শেষ হলে বিস্তারিত জানাতে পারব।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর