বঙ্গবন্ধু টানেল-এক্সপ্রেসওয়ে কাজের উদ্বোধন, নবযাত্রায় চট্টগ্রাম
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:৩২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দুই মহাপ্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প দু’টি হচ্ছে- কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিতব্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। প্রকল্প দুটির নির্মাণ খরচ প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিতব্য টানেলটি দেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথ। চট্টগ্রামে এর মূল নির্মাণকাজের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে উন্নয়নের যাত্রায় আরেকধাপ এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ হাসিনা প্রথমবার চট্টগ্রামে এসেছেন।
রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সড়কপথে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় টানেল এলাকায়।
সেখানে টানেলের মূল মাটি খনন এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
https://www.youtube.com/watch?v=QMyAsQHZCZ8
এরপর প্রধানমন্ত্রী পতেঙ্গার সাগর পাড়ে আয়োজিত সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন। সেখানে উন্মুক্ত আকাশের নিচে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ।
২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদীঘি মাঠে এক জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় গেলে কর্ণফুলীতে টানেল নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫৫ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় তা আট হাজার ৪৪৬ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪ হাজার ৭৯৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার যোগান দিচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। বাকি ৩ হাজার ৬৪৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর কর্ণফুলী নদী এলাকায় নেভাল একাডেমি থেকে ৩১ মিটার গভীর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে টানেল। এরই মধ্যে প্রকল্পের ২৪ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২২ সাল নাগাদ টানেল নির্মাণ শেষে গাড়ি চলাচল শুরুর কথা রয়েছে।
টানেল নির্মাণের পর কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ে চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ার লক্ষ্য আছে সরকারের। এছাড়া কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও বিশেষ পরিবর্তন আনবে এই টানেল।
টানেলটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নামে করার প্রস্তাব মন্ত্রীসভায় দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এদিকে বন্দরনগরীর প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে ম্যাক্স-রেঙ্কিন জেভি। লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নয়টি পয়েন্টে ২৪টি র্যাম্প থাকবে।
সারাবাংলা/আরডি/একে
আরও পড়ুন
যেভাবে টানেলের যুগে ঢুকে পড়েছে বাংলাদেশ
যেভাবে তৈরি হচ্ছে কর্ণফুলী টানেল
সব প্রস্তুত, উদ্বোধনের অপেক্ষায় কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ কাজ
কর্ণফুলীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল
রূপালি রেখার তলে কর্ণফুলী টানেল, কাজ চলছে পুরোদমে
কর্ণফুলী টানেল (ভিজ্যুয়াল)
বঙ্গবন্ধুর নামে কর্ণফুলী টানেলের নামকরণ প্রস্তাব