Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে রাজনৈতিক সমাধান চায় জাতিসংঘ


২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:১৭

সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ আল মেরাইখিসহ অন্য বক্তারা

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: কেবল মানবিক সহায়তা দিয়ে রেহিঙ্গাদের সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয় বলে মনে করেন জাতিসংঘ মহাসচিবের মানবিক সহায়তা বিষয়ক দূত আহমেদ আল মেরাইখি। তিনি বলেন, ‘মানবিক সহায়তা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারে কিন্তু এর পুরো সমাধানের জন্য রাজনৈতিক সমাধান দরকার।’ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ইউনিসেফ।

আহমেদ আল মেরাইখি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার ১৮ মাস পরেও এখনো অনিশ্চয়তায় রয়েছে রোহিঙ্গা শিশুরা। তাদের দরকার জরুরি শিক্ষা ও জীবনমুখী কাজে দক্ষতা।’

রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বিনিয়োগের জন্য সবাইকে সম্মত হবে মন্তব্য করে আহমেদ আল মেরাইখি বলেন, ‘যেন তারা জীবনকে পরিচালনা করতে পারে এবং যখন তারা নিজ দেশে ফিরে যেতে সক্ষম হবে, তখন সেখানে তারা অংশ হতে পারে। কারণ, বর্তমানে তারা আইনি পরিচয় ছাড়া মাদক কারবারিদের অনুকম্পায় রয়েছে।’

প্রসঙ্গত, আহমেদ আল মেরাইখি ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোরের সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করছেন। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের কুতুপালং-উখিয়ায় অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফর করে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও জনবহুল শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্র এখানে। আর এখানে বসবাসরত রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য টেকসই কোনো সমাধান দেখা যাচ্ছে না। কক্সবাজারে অবস্থানরত ৫ লাখ রোহিঙ্গা শিশু শরণার্থী অবস্থায় রয়েছে। তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন এবং হতাশা ও নৈরাশ্যের ঝুঁকিতে আছে।’

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ‘রোহিঙ্গাদের নিতে রাজি হলেও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করেনি মিয়ানমার’

ইউনিসেফ জানায়, এসব শিশু আনুষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে থাকছে। কোনও কাজে তারা দক্ষতা অর্জন করছে না। এসব শিশুর নিজ দেশে আইনি পরিচয় বা নাগরিকত্ব নেই। বাংলাদেশেও শিশুদের জন্ম নিবন্ধন করা হচ্ছে না। তাদের বৈধ পরিচয় বা শরণার্থী মর্যাদা নেই।

যারা মিয়ানমারে তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার যোগ্য, তাদের জন্য মিয়ানমারের পরিস্থিতি যতক্ষণ অনুকূল না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত রোহিঙ্গা শিশুরা রাষ্ট্রহীন সংখ্যালঘু অবস্থায় থাকবে।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, ‘বৈশ্বিক সমাজ হিসেবে আমাদের যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা অপরিমেয়। যেসব শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীকে বিশ্ব ‘রাষ্ট্রহীন’ বলে আখ্যায়িত করেছে, তাদের নিজেদের সুন্দর জীবন গঠনে শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন প্রয়োজন।’

এদিকে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর ‘শিক্ষা কেন্দ্রগুলোয়’ ভর্তি হওয়া ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর ওপর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একটি জরিপ চালায় ইউনিসেফ। এতে দেখা যায়, ৯০ শতাংশেরও বেশি শিশু প্রাক-প্রাথমিক থেকে গ্রেড ১-২ পর্যায়ে পড়াশোনা করার যোগ্য।

মাত্র ৪ শতাংশ গ্রেড ৩-৫ পর্যায়ে এবং ৩ শতাংশ গ্রেড ৬-৮ পর্যায়ে পড়ার যোগ্য ছিল। ২০১৮ সালের শেষে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী রোহিঙ্গাদের মাত্র ৩ শতাংশ শিক্ষা বা কারিগরি দক্ষতা অর্জন করে বলেও জরিফে উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ৬ লাখ ৮৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ও তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে জরুরি সহায়তা দিতে ১৫ কোটি ২০ লাখ ডলার সহায়তা চেয়েছে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদনের ২৯ শতাংশ তহবিল পেয়েছে সংস্থাটি।

সারাবাংলা/জেএ/এমএনএইচ

রোহিঙ্গা সংকট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর