পদ্মাসেতু বিশ্ববাসীর দৃষ্টিভঙ্গী বদলে দিয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৫
সারাবাংলা প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্প পদ্মাসেতু নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বাবাসীর দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হয়েছে। কম্বোডিয়ার নমপেনে রোববার হোটেল সোফিটেলে এক নৈশভোজে এ কথা বলেন। এ খবর জানিয়েছে বাসস।
ওই নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন তারা দেখবেন, আমরা পদ্মাসেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় বিশ্ববাসী এখন বাংলাদেশকে ভিন্নচোখে দেখতে শুরু করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বাস্তব যে, সকলেই এখন বাংলাদেশ সম্পর্কে সমীহ করে কথা বলেন। বিজয়ী জাতি হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় মাথা উঁচু করে চলবে।
থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং বর্তমানে কম্বোডিয়ার অ্যাক্রিডেটেড সাইদা মুনা তাসনিম প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে এই নৈশভোজের আয়োজন করেন। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও নৈশভোজে অংশ নেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মাসেতু নির্মাণটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ এবং অনেকেরই এমন ধারণা ছিল বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া আমরা এটা নির্মাণ করতে পারবো না। কিন্তু আমি বলেছি আমরা পারব এবং আমরা করে দেখাব। আমরা মিথ্যা অভিযোগ কেন মাথা পেতে নেব? এটা সত্য যে এরফলে আমাদের অনেক সমস্যা পোহাতে হয়েছে তা স্বত্বেও আমরা চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করেছি।’
পদ্মাসেতুর মত মেগা প্রজেক্টও বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করতে পারে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজস্ব সামগ্রী-বিশেষকরে আমাদের সিমেন্ট এবং স্টিল দিয়ে ব্রিজটি নির্মাণ করছি।’
বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার মধ্যে নানাদিকে সাদৃশ্য রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দু-দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত হবে।
এই দুটি দেশই এক সময় গণহত্যার শিকার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুটি দেশের জনগণকেই সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। বর্তমানে কম্বোডিয়ান প্রধানমন্ত্রীও অনেক যন্ত্রণা এবং সংকটের মধ্যদিয়ে সময় অতিবাহিত করেছেন।
দু’দেশের কূটনীতিকে আরও জোরদার করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কাজকর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্য দক্ষিণ এবং দক্ষিণ, দক্ষিণ- পূর্ব এবং ইউরো-এশিয়ার দেশগুলি বিশেষ করে কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডে বিস্তার ঘটাতে পারি সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের নতুন বাজার খোঁজার আহবান জানিয়ে বলেন, আপনাদের নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে যেখানে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সংযোগ জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে ভূমিকা রাখবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর সরকারের মূল লক্ষ্যই হলো দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উত্তরণ ঘটানো, দারিদ্র্য বিমোচন, মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়া এবং গ্রামীণ জনতার ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানো।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে-বেসমরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইজেকে/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭