‘বন্ধ হওয়া বাংলাদেশ-ভারত রেলপথ ফের চালু হবে’
৬ মার্চ ২০১৯ ১১:১৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
সংসদ ভবন থেকে: বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে ভারতীয় রেলওয়ের সংযোগের জন্য বন্ধ থাকা ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট বা সংযোগ পয়েন্ট ফের চালু হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেলযোগাযোগের সাতটি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টের মধ্যে বর্তমানে চারটি চালু আছে। বাকি তিনটি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নতুন দুইটি ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টও চালু করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে মন্ত্রী সংসদকে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী সংসদকে জানান, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যেসব ইন্টারচেঞ্জ চালু রয়েছে সেগুলো হচ্ছে— দর্শনা-গেদে, বেনাপোল-পেট্রাপোল, রোহনপুর-সিঙ্গাবাদ ও বিরল-রাধিকাপুর।
মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের শাহবাজপুর ও ভারতের মহিশাসনের মধ্যে ১১ কিলোমিটারের ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টটি ২০০২ সালের ৭ জুলাই বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারচেঞ্জটি ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ। কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেললাইনের জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টটি বন্ধ আছে। ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ের কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে নির্মাণ কাজ চলমান।
মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন আরও জানান, চিলাহাটি (বাংলাদেশ)-হলদিবাড়ির (ভারত) ৯ কিলোমিটার ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টটি ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যায়। ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টের মাধ্যমে ভারতের মধ্য দিয়ে নেপাল ও ভুটানে পণ্য পরিবহন করা সহজ। এই পয়েন্টটি ফের চালুর জন্য ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চিলাহাটি ও চিলাহাটি সীমান্তে ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে। চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দরপত্র উন্মুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়াধীন।
মন্ত্রী জানান, বুড়িমারী (বাংলাদেশ)-চেংরাবান্ধার (ভারত) মধ্যে ৩ কিলোমিটার ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্টটি ১৯৭১ সালে বন্ধ হয়ে যায়। বুড়িমারী স্টেশন থেকে ৩ কিলোমিটার নতুন ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ এবং বুড়িমারীতে ট্রান্সশিপমেন্ট ব্যবস্থা চালু করলে ভারত, ভুটান ও বাংলাদেশের মধ্যে এ ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট দিয়ে পণ্য চলাচল সহজ হবে। এ লক্ষ্যে একটি ত্রি-পক্ষীয় এমওইউ বা প্রটোকল সইয়ের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
রেলপথমন্ত্রী জানান, নতুন দু’টি পয়েন্টে ইন্টারচেঞ্জ চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হযেছে। এর মধ্যে আখাউড়া (বাংলাদেশ)-আগরতলায় (ভারত) ১০ কিলোমিটার একটি নতুন ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট রয়েছে। এই পয়েন্ট চালু করার জন্য আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলা ভারতীয় বর্ডার পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে ভারত সরকারের অনুদানে একটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন পেয়েছে। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে নির্মাণ কাজ চলমান আছে।
তিনি জানান, ফেনী-বিলোনিয়া প্রায় ৩৩ কিলোমিটার একটি নতুন ইন্টারচেঞ্জ পয়েন্ট চালু করা হবে। এ লক্ষ্যে ফেনী থেকে বিলোনিয়া রেললাইন সংস্কার/পুনঃনির্মাণ করা প্রয়োজন। ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন সংস্কার/পুনঃনির্মাণ কাজ ভারতীয় অনুদানে সম্পন্ন করার প্রস্তাব বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
বাংলাদেশ-ভারত রেলপথ রেলপথমন্ত্রী রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন