রোকেয়া হলের সকলের জন্য কাজ করতে চাই: ইশরাত জাহান তন্বী
১৬ মার্চ ২০১৯ ১২:১৩
।। সারাবাংলা ডেস্ক।।
ঢাকা: `আমরা নির্বাচনে আমাদের ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে তাই সকলকে নিয়েই কাজ করতে চাই। আমাদের হলের সকল বোনদের জন্য কাজ করতে চাই একসাথে। নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো যতক্ষণ পূরণ করতে পারবো না ততক্ষণ নিজেকে সফল বলে ভাবতে পারবো না।’
১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে রোকেয়া হল থেকে নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ইশরাত জাহান তন্বী এভাবেই নিজের প্রতিশ্রুতি পূরণের অঙ্গীকারের কথা বলছিলেন সারাবাংলার কাছে। পাঁচটি ছাত্রী হলের মধ্যে তিনিই একমাত্র ছাত্রলীগের প্রার্থী হিসেবে সহ-সভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন।
বুধবার (১৩ মার্চ) মুঠোফোনে সারাবাংলাকে ইশরাত জাহান তন্বী বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পরে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমরা ঐতিহ্যবাহী রোকেয়া হলের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে চেষ্টা করেছি এমন একটি ইশতেহার দেওয়ার যেখানে সবাই আমাদের কাছে দাবি দাওয়াগুলো জানাতে পারেন। এই লক্ষ্যে আমরা হলে ‘ কেমন ইশতেহার চান ’ তা জানতে চেয়ে একটি বক্স রাখি। সেখানে হলের আপুরা নিজেদের সমস্যা ও প্রত্যাশাগুলো জানান। সেই হিসেবেই আমাদের ইশতেহার প্রস্তুত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলোর কথা জানিয়ে তন্বী বলেন, হলের আপুদের একটি আক্ষেপ ছিল ছেলেদের হলে বাবা, ভাই রা যেতে পারলেও মেয়েদের হলে বিগত সময়গুলোতে মা আসতে না পারার কারণে। স্বাভাবিক কারণেই মায়েরাও কিন্তু চিন্তাতে থাকতেন।
এছাড়াও ৭ ই মার্চ ভবনে ৪টি লিফট থাকা সত্ত্বেও ঐতিহ্যবাহী এই হলের আবাসিক ছাত্রীদের জন্য মাত্র ১টি লিফট খোলা থাকতো। যে কারণে শিক্ষার্থীদের অনেক সমস্যাই হতো। সেইক্ষেত্রে একটির স্থানে যদি তিনটি লিফট খোলা থাকে তবে সেটিও আমাদের জন্য সুবিধা হয় অনেক। রিডিং রুমেও কিছু সমস্যার কথা জানা গেছে। যেখানে দেখা যায় অনেকেই পর্যাপ্ত সময় পান না। বলেন, তন্বী
আমাদের এতো বড় একটি ঐতিহ্যবাহী হলে সবকিছুই আছে কিন্তু কোন ফার্মেসী নেই। এছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য মাত্র একটি স্টোর আছে। সেটিতে দেখা যায় অনেক লম্বা লাইন পার করে কিছু কিনতে হয়। এতে প্রচুর সময় ক্ষেপণ হয়। হলের সকল আবাসিক শিক্ষার্থীদের তুলনাতে ভাবতে গেলে সেটি আসলে তেমন বড় না। ৭ মার্চ ভবনে আমাদের একটি রান্নাঘর থাকাতে অনেকেই নিজেরা রান্না করতে চাই। কিন্তু এতো বিশাল হলে সবজির দোকান মাত্র একটি। যেখানে দাম হয়তোবা কিছু ক্ষেত্রে বেশী পড়ে। এছাড়াও হলের গেইট আগে রাত সাড়ে নয়টায় বন্ধ হয়ে যেতো। যে কারণে দুর দূরান্ত থেকে আসা অনেক শিক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারতো না।
এমন অনেক সমস্যা জানিয়েছিল আপুরা নির্বাচনের আগে। সেগুলো আমরা আমাদের ইশতেহারে বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেই। এই সমস্যাগুলোর সমাধান যতক্ষণ করতে পারছি না ততক্ষণ নিজেকে জয়ী বলে ভাবতে পারছিনা। কারণ আমি আমার জন্য না আমার আপুদের বিশ্বাসের কারণে জয়ী হয়েছি। যোগ করেন তন্বী।
যদিও নির্বাচনের পরে খুবই অল্প সময় হয়েছে তাও আমি প্রতিটি ক্ষণকেই গুরুত্বপূর্ণ ভাবি। সেই লক্ষ্যে আমরা হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কিছু সমস্যা সমাধানের উদ্যোগও নিয়েছি। এখন প্রতিটি আবাসিক ছাত্রীর মা অথবা মহিলা অভিভাবক হলে প্রবেশের অনুমতি পাবেন শুক্রবার ও শনিবারের জন্য। এছাড়াও হলে প্রবেশের সময় সীমা ১০টা পর্যন্ত করা হয়েছে। ৭ই মার্চের বহুতল ভবনের সকাল সাড়ে ৭ টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কমপক্ষে তিনটা লিফট খোলা থাকবে। রাত ১১টা থেকে সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত ১টা লিফট খোলা থাকবে। এই সিদ্ধান্তগুলি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করেছি। আশা করি ভবিষ্যৎ দিনগুলিতে সকলকে সাথে নিয়ে আমাদের ইশতেহারে দেয়া ২৮টি দাবী পূরণে কাজ করে যেতে পারবো বলে জানান ঐতিহ্যবাহী রোকেয়া হলের নবনির্বাচিত ভিপি ইশরাত জাহান তন্বী।
১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ৫৬৮ ভোট পেয়ে ঐতিহ্যবাহী রোকেয়া হলের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন ইশরাত জাহান তন্বী। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। এর আগে তিনি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সারাবাংলা/এসবি/জেএএম