শিশু-কিশোরদের তুলিতে বঙ্গবন্ধু, স্বদেশ
১৭ মার্চ ২০১৯ ১৭:৫১
।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গৌরব ‘৭১-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এতে প্রায় সাড়ে আটশ শিশু-কিশোরের রঙ-তুলিতে ফুটে ওঠে বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি।
রোববার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদে এই শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, কেন্দ্রীয় কর অঞ্চলের কর কমিশনার আসাদুজ্জামান, গৌরব ‘৭১-এর সভাপতি এস এম মনিরুল ইসলাম মনি।
অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন মানেই বাংলাদেশের জন্মদিন। কারণ বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো কি না, সন্দেহ আছে। গৌরব ’৭১ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় দায়িত্ব পালন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গোটা চারুকলা প্রাঙ্গণ এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে কলকাকলিতে মুখর। শিশুরা তাদের মন মগজে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসছে। এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে দেশপ্রেমে জাগ্রত হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি শহীদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ সমার্থক। বিশ্বে যারা বাংলাদেশকে চেনে না, তারাও কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে চেনে। আমরা বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না।
অভিভাবকের উদ্দেশে শহীদুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ, দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা আপনারা সন্তানদের বোঝাবেন। দেশপ্রেমের প্রতি তাদের এখন থেকে উদ্বুদ্ধ করবেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ অভিভাবকদের প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কি শিশুদের বঙ্গবন্ধুর গল্প শোনান?’ উত্তরে অভিভাবকরা ‘শোনান’ বলে জবাব দেন। এরপর তিনি শিশুদের প্রশ্ন করেন, ‘সব রঙের মধ্যে লাল ও সবুজ বেশি আনন্দ দেয়, তাই না?’ শিশুরা ‘হ্যাঁ’ জবাব দিলে তুরিন বলেন, আমাদের জাতীয় পতাকার রঙ লাল ও সবুজ। এজন্য এই দু’টি রঙ আমাদের আলাদাভাবে আকর্ষণ করে। এসময় তিনি শিশুদের জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান ধারণ করার আহ্বান জানান।
আয়োজকরা জানান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাটি তিনটি বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে অনূর্ধ্ব তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ‘ক’ বিভাগ, চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ‘খ’ বিভাগ ও সপ্তম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ‘গ’ বিভাগে রাখা হয়। ‘ক’ বিভাগের অঙ্কনের জন্য কোনো বিষয় নির্ধারিত ছিল না। ‘খ’ বিভাগের জন্য বিষয় ছিল ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ; আর ‘গ’ বিভাগের বিষয় ছিল ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’। প্রতিটি বিভাগ থেকে ১০ জন করে তিন বিভাগের মোট ৩০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় ক্রেস্ট, মুক্তিযুদ্ধের বই ও সার্টিফিকেট। এছাড়া অন্য অংশগ্রহণকারী ও শারীরিকভাবে অক্ষমদের প্রত্যেককে মুক্তিযুদ্ধের বই ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়।
‘ক’ বিভাগের পুরস্কার পেয়েছে কাহেরুন নেসা রিচি, তাহরিদ রশিদ, ফাহমিদ উবায়েদ ভূঁইয়া, জান্নাতুল হক, সুমাইয়া নুসাইয়া, জারিন মেহজাবিন, অনুষ্কা হক, বাইদুর রহমান অভয়, ফারিয়া হুমায়রা রাইহাদ ও আফরা নাওয়া সিরাজী।
‘খ’ বিভাগে পুরস্কৃতরা হলো— পিদমি রায়, জারির মাহমুদ, ফারহান শাহরিয়ার সন্ধি, লাবীবা আহমেদ, সাজ্জাদ হোসাইন, তানভীর ইসলাম, মুবাসসির আরিফ, জয়া রায়, অদিতি পোদ্দার ও তাসফিয়া।
অন্যদিকে, ‘গ’ বিভাগে পুরস্কার পেয়েছে হায়দার সিয়াম, মেহতাসিবা হোসাইন, নাফিউল হক, মুশফিকা রহমান, ইয়াসিন আরাফাত শাফি, ইফশিকা পিও, রাদিয়া আহমেদ, সৈয়দা মুবাসসিরা, তাজিয়া তাহসিব ও আবদুল্লাহ আল রাফি।
সারাবাংলা/কেকে/টিআর
গৌরব-৭১ জাতীয় শিশু দিবস বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা