অসত্যের কাছে মাথা নত না করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান
১৮ মার্চ ২০১৯ ১৭:২৩
।। চবি করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: অসত্যের কাছে মাথানত না করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।
সোমবার (১৮মার্চ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইদিনের ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট-২০১৯ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপাচার্য এই আহ্বান জানান। ‘সম্পর্কের পুনঃনির্মাণ, সমৃদ্ধির দিকে ধাবমান’ এই স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া উৎসবে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন উপ-উপাচার্য ড.শিরীন আক্তার এবং সারাবাংলা ও জিটিভি’র এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ উল্লেখ করে বলেন, আমরা বীরের জাতি। অসত্যের কাছে মাথা নত না করে বীরের মত লড়াই করে বাঙালি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। জনগনের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য পৌঁছানোর জন্য যে অবদান সেটা অসামান্য। নিরপেক্ষ বলে কোনো কথা নেই। তবে অসত্যের কাছে মাথা নত করো না। সংবাদের ক্ষেত্রে বস্তুনিষ্ঠতা, সত্যনিষ্ঠতা অবলম্বন করতে হবে। সংবাদের ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করাটাই আসল।
‘দু’য়েকজনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের কারণে সাংবাদিকতা যেন কলুষিত না হয়, সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকতে আহ্বান জানান উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘মিডিয়া পবিত্র জায়গা। এটাকে যেন কেউ কলুষিত করতে না পারে।’
মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষুরধার লেখনী প্রত্যাশা করেন বলেও জানান উপাচার্য।
বিভাজিত সমাজে সাংবাদিকতা করা কঠিন
অনুষ্ঠানে সারাবাংলা ও জিটিভি’র এডিটর ইন চিফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত ক্যাম্পাস প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, ‘নানা চড়াই-উৎরাই পার হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে আজ ৫০ বছর ছুঁই ছুঁই। বেশকিছু বড় ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক আবহকে অনেক সংকটময় করে রেখেছিল। এখনও সেই সংকট পুরোপুরি দূর হয়নি। বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরুর পরও আমরা দেখেছি, একটি সমাজ সাংঘাতিকভাবে বিভাজিত। বিভাজিত সমাজে সাংবাদিকতা করা বেশি কঠিন। কারণ কেউ না কেউ আপনাকে পক্ষভুক্ত বা কেউ না কেউ আপনাকে বিপক্ষভুক্ত করার চেষ্টা করবে।’
এই সংকটের মধ্যেও সাংবাদিকদের বাংলাদেশের সমাজের ওয়াচডগ হিসেবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান এই গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।
ইশতিয়াক রেজা বলেন, ‘একটা কঠিন বাস্তবতার ভেতর দিয়ে সাংবাদিকতা করতে হয়। চ্যালেঞ্জ আছে, অপরচুনিটিও বেশি। অপরচুনিটি এ কারণে যে, এখানে বহুমুখী সুযোগ আছে। একই প্রতিবেদক রাজনীতি, খেলা, ক্রাইম, ক্যাম্পাসে নানা ধরনের যেসব ঘটনা ঘটছে, সব রিপোর্টিং করছে।’
‘একই রিপোর্টারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে জ্ঞানের চর্চা হয়, গবেষণা হয়, শিক্ষকদের নানা ধরনের কর্মকাণ্ড সেই রিপোর্টিংগুলো করতে হয়। এতে একটা ভালো ক্যারিয়ার গড়ে ওঠে। তাদের (ক্যাম্পাস প্রতিনিধি) আবার নতুন করে কাজটা শেখাতে হয় না। স্বভাবজাত অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করা, অনুসন্ধানী চোখ, দৃষ্টিভঙ্গী তাদের মধ্যে খুঁজে পাই আমরা,’ যোগ করেন ইশতিয়াক রেজা। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকদের বড় অংশ ক্যাম্পাস জার্নালিজমে যুক্ত ছিল বলেও জানান তিনি।
এর আগে সকালে জাতীয় সঙ্গীত ও শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড.শিরিন আখতার, প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সৈয়দ বাইজিদ ইমন।
উৎসবে ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭টি সংগঠনের দু’শরও বেশি সাংবাদিক অংশ নিচ্ছে।
সারাবাংলা/সিসি/আরডি/এসএমএন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা