রোহিঙ্গাদের তহবিল অপব্যবহার করা হচ্ছে না: এনজিও ফোরাম
২২ মার্চ ২০১৯ ০১:৫৫
ঢাকা: গত ১৩ মার্চ গণমাধ্যমে প্রকাশিত আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক কেবিনেট চেয়ারপার্সন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হকের দেওয়া বক্তব্য গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক এনজিও ফোরাম।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে কাজ করা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোর ফোরাম (আইএনজিও ফোরাম) মন্ত্রীর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এইসব অভিযোগ জনসমক্ষে নিয়ে আসার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। ফোরাম জানায়, আমরা তার উদ্বেগের কারণ বুঝতে পারছি। কেননা কর্মসূচির পরিচালন ব্যয় যৌক্তিক এবং সীমিত থাকা বাঞ্চনীয়।
প্রসঙ্গত, একেএম মোজাম্মেল হক অভিযোগ করছিলেন, এনজিওরা রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশে আনা ত্রাণ সাহায্যের প্রায় ৭৫ ভাগই নিজেদের স্বার্থে খরচ করেছে। অভিযোগ করা হয়েছে যে, প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ছয় মাসে হোটেলের বিল বাবদ ব্যয় করা হয়েছে। একইসাথে পারডিয়েম, বাসস্থান এবং যাতায়াত খাতে বিশাল ব্যয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কোনো এনজিও অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছে মর্মেও অভিযোগ উঠেছে।
এনজিও ফোরাম মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানায়, বিভিন্ন জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক এনজিও এবং দেশীয় এনজিও সরকারের সাথে একাত্ম হয়ে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচিতে কাজ করে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সাহায্য কর্মসূচিতে সকলের মিশন এক হলেও বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন, পরিচালন পদ্ধতি এবং বাজেট পদ্ধতি ভিন্ন ভিন্ন।
রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে কর্মরত সকল আন্তর্জাতিক এনজিও আর্থিক নিয়ম-শৃঙ্খলা ও বিধি-বিধান সরকার অনুমোদিত পরিচালন মানদণ্ড অনুযায়ী অত্যন্ত কঠোরভাবে প্রতিপালন করে বলেও জানায় তারা। একইসঙ্গে আরও জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর সুনির্দিষ্ট অনুমোদনের প্রেক্ষিতেই কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে বিস্তারিত আর্থিক বিবরণ এবং খাত ওয়ারী বাজেট বিশ্লেষণ করেই সুনির্দিষ্ট প্রকল্প অনুমোদন করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা আন্তর্জাতিক এনজিওগুলো বাংলাদেশ সরকারের সকল বিধি-বিধান কঠোরভাবে প্রতিপালন করে বিভিন্ন প্রকারের পরিচালন ব্যয় যেমন পারডিয়েম, বাসস্থান এবং যাতায়াত খরচ মিটিয়ে থাকি। আমরা প্রত্যেকে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য নিয়মিত এবং পদ্ধতিগতভাবে এনজিও ব্যুরোর কাছে রিপোর্ট করে থাকি। আমাদের প্রত্যেকের কর্মসূচি স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে মূল্যায়ন করা হয় এবং আমাদের আর্থিক লেনদেন তালিকাভুক্ত অডিট ফার্ম দ্বারা অডিট করা হয়।
বাংলাদেশ আইএনজিও ফোরামের পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্তর্জাতিক এনজিওরা এসকল অভিযোগের পাত্র হতে পারে না এবং এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে যে কোন তদন্তে সম্পূর্ণ উন্মুক্ত থেকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করার জন্য নিশ্চয়তা দিচ্ছি। একইসঙ্গে স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের কর্মসূচি এবং পরিচালন সম্পর্কে জন নিরীক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবো বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
** ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে’
সারাবাংলা/জেএ/এমআরপি