উপজেলা নির্বাচন: চট্টগ্রামে লড়াই আ.লীগ বনাম আ.লীগে
২৩ মার্চ ২০১৯ ২১:৪০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রামের চার উপজেলায় নির্বাচন হবে আগামীকাল রোববার। এদিন লোহাগাড়া উপজেলায়ও ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে সেখানে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। তবে গত ধাপের মতো নির্বাচন এবার নিরুত্তাপ নয়। ৪ উপজেলাতেই চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রয়েছেন। সঙ্গে আছে একই দলের বিদ্রোহীরাও।
যে চার উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে সেগুলো হলো- বোয়ালখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী। চার উপজেলায় ১২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ২৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের নেতা।
বোয়ালখালীতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবদুল কাদের সুজন।
পটিয়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাজ্জাত হোসেনও।
এছাড়া বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও এই উপজেলায় দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন গতবার ভাইস চেয়ারম্যান পদে জয়ী আফরোজা বেগম জলি। তবে প্রার্থী হওয়ায় তাকে বহিস্কার করেছে বিএনপি।
এছাড়া বাঁশখালীতেও চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনজন। এখানে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা সোলতানুল কবির চৌধুরীর বড় ছেলে চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী। বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. খোরশেদ আলম এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মৌলভী নুর হোসেন।
অন্যদিকে, চন্দনাইশে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন এ কে এম নাজিম উদ্দীন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এলডিপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরী।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রামের চার উপজেলার প্রতিটিতে দলের কয়েকজন নেতা নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। যারা আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করেন, তাদের পক্ষে দলের বিরুদ্ধে যাওয়া সম্ভব নয়। আমি মনে করি, যত প্রার্থীই থাকুক, জনগণ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষেই সাড়া দেবেন।’
২৪ উপজেলায় থাকছে বিজিবি, তিন ইউএনও প্রত্যাহার
এদিকে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান। তিনি জানান, ব্যালট পেপারসহ সব নির্বাচনি সামগ্রী শুক্রবার উপজেলায় পৌঁছানো হয়। শনিবার রাতের মধ্যে সেগুলো কেন্দ্রে পৌঁছে যাচ্ছে। ভোটগ্রহণের ৩ হাজার ৬০৫ জন প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৬ হাজার ৩১২ জন পোলিং কর্মকর্তা প্রস্তুত আছেন।
এছাড়া পুলিশ, র্যাব ও আনসার মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার কর্মকর্তা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, সারা দেশে তৃতীয় ধাপে হলেও এ নিয়ে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় দফা উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম ধাপে চট্টগ্রামে কোনো নির্বাচন হয়নি। দ্বিতীয় ধাপে গত ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, হাটহাজারী, সন্দ্বীপ, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়ায় নির্বাচন হয়েছিল। তবে মাত্র একটি ছাড়া সব উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ায় ভোটে তেমন উত্তাপ ছিল না।
সারাবাংলা/আরডি/এমও