‘ভালো খেলাপি’দের ঋণমুক্তির ব্যবস্থা করছে সরকার
২৫ মার্চ ২০১৯ ১৯:০১
ঢাকা: যেসব ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাদের ‘ভালো খেলাপি’ অভিহিত করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসব খেলাপিদের জন্য সরকার ঋণমুক্তির ব্যবস্থা করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে কেউ ভালো ঋণগ্রহীতা এবং কেউ অসাধু ঋণগ্রহীতা। যারা ভালো ঋণগ্রহীতা, তাদের সুযোগ দেবো। আর অসাধু ঋণগ্রহীতাদের এই সুবিধা দেওয়া হবে না।
সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে সরকারের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান তিনি।
আরও পড়ুন- ১ মে থেকে ব্যাংক ঋণে ৭ শতাংশ সরল সুদ: অর্থমন্ত্রী
অসাধু ঋণগ্রহীতা কীভাবে নির্ধারণ হবে— জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা খারাপ ঋণগ্রহীতা, তাদের রেকর্ডই তো আছেই। টাকা নিলাম, ১০ বছরেও ফেরত দিলাম না। তাহলে আমি ভালো? বা টাকা নিলাম, দুই বছরে এক টাকাও দিলাম না। আমি কি ভালো? কিংবা ১০ বার আমি রফতানি করলাম, কিন্তু একবারও আমি ব্যাংকে টাকা ঢুকালাম না। তাহলে কি আমি ভালো?
তিনি বলেন, কারা ভালো আর কারা অসাধু ঋণগ্রহীতা, সেটা বের করার জন্য আমরা একটা স্পেশাল অডিটের ব্যবস্থা করেছি। এটার কাজ শুরু হবে। সেখান থেকেও আমরা জানতে পারব, কারা ভালো আর কারা খারাপ।
ঋণগ্রহীতাদের জন্য ‘এক্সিট’ বা ঋণমুক্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কেউ যদি মনে করে যে তারা চলে যাবে, সেই ব্যবস্থাও আমরা রেখেছি। যদি মনে করি এখন তাদের লেনদেন ভালো, স্ট্যাটিক ভালো— সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা তাদের নতুন করে একই ব্যাংক থেকে ঋণ দেবো। তাদেরকে এক্সিট দেওয়ার জন্য আমরা এই ব্যবস্থা করছি।
তিনি বলেন, যদি কেউ বিপদে পড়ে যায়, তাদের জন্যও এক্সিটের ব্যবস্থা আছে। আমরা অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি করব। আমাদের ইনসলভেন্সি আইন তৈরি হচ্ছে। এই আইনের আওতায় নন-পারফর্মিং ঋণগুলো সব ওই কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেওয়া হবে। তারা এগুলো পাবলিক টেন্ডার দিয়ে বিক্রি করে ঋণের অর্থ আদায় করবে।
ঋণমুক্তির এই ব্যবস্থা গ্রহণের পেছনে উত্তরসূরী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রসঙ্গ টেনে মুস্তফা কামাল বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকার সময় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দূরাবস্থা নিয়ে অনেক চিন্তাভাবনা করেছিলেন। কারণ আমাদের ব্যাংকারদেরও লাগবে, ঋণগ্রহীতাদেরও লাগবে। ঋণগ্রহীতারাই তারাই কর্মসংস্থান তৈরি করে, দারিদ্র্য দূর করে, অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে। সুতরাং ঋণগ্রহীতাদের বাদ দিয়ে আমাদের চলার কোনো ব্যবস্থা নাই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই সাবেক অর্থমন্ত্রী ভেবেছিলেন ঋণগ্রহীতাদের কোনোভাবে এক্সিটের (ঋণমুক্তি) ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় কি না। সেই বিবেচনায় তিনি একটি কমিটি করে দিয়েছিলেন। সেই কমিটির কিছু পরামর্শ ছিল। সেগুলো তিনি বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। আমরা সেসব নিয়ে কাজ করছি।
সারাবাংলা/জেজে/টিআর