জনগল্প’৭১- এর প্রয়াসটি যেন থেমে না যায়
২৮ মার্চ ২০১৯ ০৪:১২
ঢাবি: ‘জনগল্প’৭১- এ মুক্তিযুদ্ধে দেশের সাধারণ মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতার অজানা অধ্যায় তুলে ধরা হয়েছে। সত্যনিষ্ঠ তথ্যের জন্য গবেষকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও বিপুল আগ্রহের কারণ হয়ে দাঁড়াবে বইটি। সব প্রজন্মের মানুষ জানতে পারবে স্বাধীনতার জন্য এদেশের মানুষকে কি পরিমাণ মূল্য দিতে হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলানায়তনে হয় জনগল্প’৭১- এর প্রথম খণ্ডের প্রকাশ ও পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠান। শুরুতে পরিবেশিত হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান। অনুষ্ঠানে বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প পড়ে শোনানো হয়।
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কথাশিল্পী জাহানারা নওশীন, ড. নূহ উল আলম লেনিন এবং জনগল্প’৭১- এর সম্পাদক কবি নিশাত জাহান রানা।
নূহ উল আলম লেনিন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধকালে আমরা ঘৃণা এবং ভালোবাসা দেখেছি। সেটি তুলে আনার জন্য যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে সেটি অব্যাহত থাকুক।’ জনগল্প’৭১- বহুখণ্ডে প্রকাশিত হলে সেটি মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্যে পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জনগল্প’৭১- এর সম্পাদক কবি নিশাত জাহান রানা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরে মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ মানুষের যুদ্ধকালীন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অনুসন্ধান ও লিপিবদ্ধ করে চলেছি। ঐতিহাসিক বিষয়টি ধারাবাহিক প্রকাশনার মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।
জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘একজনকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনি কি করেছিলেন। সে উত্তর দিয়েছিল- নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছি। কথাটা শুনে প্রথমে হাসি পাওয়ার কথা। কিন্তু একটু ভাবলে বোঝা যাবে মৃত্যুর উৎসবের মধ্যে প্রাণ বাঁচানোটাও একটা কঠিন কাজ ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধের সময় কত মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছে, কত মানুষ তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রেখেছে , কত মানুষ নানা গুরুত্বপূর্ণ জায়গার ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছে। আর কত মানুষ জীবন দিয়েছে।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ প্রকৃত জনযুদ্ধ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগল্প’৭১- মূল্যবান আকল হিসেবে গৃহীত হবে।’
গল্প সংগ্রহীতা ঝরণা রহমান বলেন, ‘চার বছরের বেশি সময় ধরে এটি চলছে। লেখা সংগ্রহ করা অনেক কঠিন কাজ। কারণ লেখাগুলো সাহিত্যিকের লেখা নয়, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় ছিলেন এবং এখনও বেঁচে আছেন, তাদের লেখা।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিএ