১৮ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো
২৮ মার্চ ২০১৯ ১০:০২
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের ১৮ হাজার মানুষের প্রতিদিনের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। চর নরিনা বাজার সংলগ্ন হুড়াসাগর নদীর ওপর ২৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকোটি স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হলেও সেটির অবস্থা এখন নড়বড়ে।
জানা যায়, চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণে ব্যয় হয় তিন লাখ টাকা। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় একাধিকবার সংস্কার কাজও হয়েছে সাঁকোটির।
সরেজমিনে জানা যায়, এ গ্রামে যাতায়াতের ভালো কোনো রাস্তা নেই। এলাকাবাসীর কাছে এই বাঁশের সাকোটিই যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। সাঁকোটি দিয়ে চর নরিনাসহ আশেপাশের ১৬ গ্রামের ১৫ হাজার মানুষ, ১০টি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার তিন হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে।
নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে
যেসব গ্রামের বাসিন্দারা সাঁকোটি ব্যবহার করে সেগুলো হলো— চর নরিনা, নরিনা, টেপরী, চরটেপরী, বারইটেপরী, পুনারটেপরী, বওশাগাড়ি, সাতবাড়িয়া, আগনুকালি, জয়রামপুর, চিলাপাড়া, মালতিডাঙ্গা, চরডিগ্রিরচর, খামারউল্লাপাড়া, কালিপুর ও ধুকুরিয়াবেড়া। যেসব স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সাঁকোটি ব্যবহার করে সেগুলো হলো— চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়, চরনরিনা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর নরিনা পূর্ব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খামার উল্লাপাড়া হাই স্কুল, সাতবাড়িয়া হাইস্কুল, সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ, সাতবাড়িয়া কারিগরি কলেজ, সাতবাড়িয়া মাদ্রাসা, নরিনা হাইস্কুল ও নরিনা মাদ্রাসা।
চর নরিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নূর মোহাম্মদ ও বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. আব্দুস সেলিম জানান, চর নরিনা বাজার ও চর নরিনা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এ বাঁশের সাঁকোটি বছর তিনেক আগে নির্মাণ করা হয়। সাঁকোটির নির্মাণ দীর্ঘদিনের হওয়ায় এটি এখন নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তাই বর্ষা মৌসুমে এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে যাতায়াতের সময় স্কুলগামী কোমলমতি অনেক শিক্ষার্থী পানিতে পড়ে যায়।
কংক্রিটের সেতু প্রয়োজন
টেপরী ও চরটেপরী গ্রামের সুজাবত আলী মহুরী, সেলিম হোসেন, স্বপন মেম্বর, রফিকুল ইসলাম, ঠাণ্ডু মিয়া জানান, শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের চর নরিনা গ্রামটি অত্যন্ত দুর্গম এলাকা। এখানে একটি কংক্রিটের সেতু অতি প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে নরিনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বলেন, ‘এখানে একটি কংক্রিটের সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু এখনো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন বলেন, ‘এলাকাবাসী তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়ে লিখিত আবেদন করলে সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/একে