Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রশ্নফাঁসের প্রতারণায় পা দেন অনেক রাজনীতিকও : নওফেল


২৯ মার্চ ২০১৯ ২০:০১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রশ্নফাঁসের প্রতারণায় পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সন্তানকে জিপিএ-ফাইভ পাইয়ে দিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক নেতাও এই প্রশ্নফাঁসের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন বলে তার কাছে খবর আছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চিব্বাড়ী এম এ মোতালেব কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আগামী ১ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উদ্দেশে নওফেল বলেন, আমাদের সমাজে এখন জিপিএ-ফাইভ একটা বড় বিষয় হয়ে গেছে। গ্রেডিং পদ্ধতি আসার পরে সবাই এখন বড় বড় গ্রেড চান। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা। এই গ্রেড বেশি পাবার মানসিকতা পরিত্যাগ করার জন্য অভিভাবকদের বিনীত অনুরোধ করছি। আপনার সন্তান যেন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়, সেদিকে নজর রাখেন।

সতর্ক করে দিয়ে মন্ত্রিসভার তরুণ এই সদস্য বলেন, ‘অনেকে গুজব ছড়াবে, বিভিন্ন ধরনের গুজব। কেউ বলবে, প্রশ্ন আছে, প্রশ্ন দিয়ে দেব কিংবা এই প্রশ্ন পেলে জিপিএ-৫ পাওয়া যাবে। আবার অনেকে মোবাইলে এসএমএস দিয়ে বলবে- আপনার ছেলেকে জিপিএ-ফাইভ পাইয়ে দেব, বিকাশে টাকা দেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি কারও নাম বলতে চাই না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, এমনকি রাজনৈতিক নেতাও মোবাইলে এসএমএস (ক্ষুদেবার্তা) আসার পর সরল মনে টাকা দিয়েছেন। সুতরাং অভিভাবকদের উদ্দেশে বলতে চাই- আপনারা সচেষ্ট থাকবেন। কেউ যেন এই প্রতারণার ফাঁদে পা না দেন।’

বিজ্ঞাপন

অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে ডেস্কে বসার চেয়ে অর্থনীতিতে অবদান রাখে, এমন কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের তাগিদ দিয়েছেন উপমন্ত্রী নওফেল। তিনি বলেন, ‘আমি অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি নিলাম আর ডেস্কে বসে থাকলাম, ডেস্কে বসে ফাইল দেখাটা কিন্তু কোনো কাজ না। মূল কাজ হচ্ছে, অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য কায়িক শ্রম দেওয়া। শ্রমের সঙ্গে যখন মেধা যুক্ত হবে, তখন সমাজ এবং অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে। কারও বাবা-মা যদি কায়িক শ্রম দেন, যদি রিকশাও চালান, সেখান থেকেও শেখার অনেককিছু আছে। অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের বিষয় আছে। আমি উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট পেলাম, কিন্তু সেই শিক্ষাটা কর্মমুখী না হলে সেটার কোনো মূল্য নেই।’

কোনো কাজকে ছোট করে না দেখে কৃষিকাজ এবং পশুপালনের মতো কাজে শিক্ষিতদের এগিয়ে আসার কথাও বলেছেন নওফেল। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা ধারণা আছে, কৃষিকাজ-পশুপালন এসব অশিক্ষিত মানুষের কাজ। সামান্য লেখাপড়া শিখলেই আমরা অনেকে মনে করি, কৃষিকাজ অতো গুরুত্বপূর্ণ না। অথচ কৃষিকাজ এবং পশুপালন সারা পৃথিবীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানের একটি কাজ। আমাদের খাদ্যের সংস্থান কিন্তু কৃষিকাজ এবং পশুপালন থেকেই হয়।

‘একজন শিক্ষিত, একজন ইন্টারমিডিয়েট পাশ ছেলে যদি কৃষক হয়, তাহলে তার হিসাবনিকাশ বোঝার সক্ষমতা অনেক বেশি থাকবে। সার কি পরিমাণ ব্যবহার করতে হবে সেই জ্ঞান অনেক বেশি থাকবে। পশুদের কিভাবে কিভাবে চিকিৎসা দিতে হবে, কি ওষুধ দিতে হবে, সেটা একজন শিক্ষিত কৃষকের পক্ষে বোঝা সম্ভব। তাই কোনো কাজকে অসম্মান করা চলবে না। শিক্ষার সঙ্গে সমাজ-অর্থনীতির সম্পর্ক তৈরি করতে হবে। এর মাধ্যমে আমাদের সমাজকে এগিয়ে নিতে হবে।’ বলেন নওফেল।

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এম এ মোতালেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোবারক হোসেন, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাতকানিয়া সার্কেল) হাসানুজ্জামান মোল্লা, সাতকানিয়া পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ জোবায়ের এবং কলেজের অধ্যক্ষ দিদারুল আলম।

সারাবাংলা/আরডি/এনএইচ

প্রশ্নফাঁস মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর