Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঝড়ে প্রাণ গেল ৩ জনের, আহত ১৫


৩১ মার্চ ২০১৯ ২১:০১

ঢাকা: রাজধানীতে মাঝ চৈত্রের হঠাৎ ঝড়ে পল্টন এলাকায় একটি ভবন থেকে উড়ে আসা ইটের আঘাতে এক চায়ের দোকানদার মারা গেছেন। অন্যদিকে সংসদ ভবন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে একজন পথচারী নারীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, মিরপুর শেওড়াপাড়া এলাকায় দুলাল মিয়া (৩৫) নামের এক গাড়িচালক নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল ধসে প্রাণ হারিয়েছেন।

ঝড়ে রাজধানীতে বেশকিছু এলাকায় সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়েছে, উপড়ে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটিও। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন। রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে শুরু হয় ঝড়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট স্থায়ী ছিল ঝড়। এসময় বৃষ্টিও হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ঝড় শুরু হলে পুরানা পল্টন এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে ইট পড়ে হানিফ মিয়া (৪৫) নামে এক চায়ের দোকানদার গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হানিফ মিয়াকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যান পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুজন। তিনি জানান, পল্টন মোড়ে চায়ের দোকান ছিল হানিফের। ঝড়ের সময় পাশের একটি দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। এসময় পাশের একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ওপর থেকে বেশ কয়েকটি ইট তার ওপর পড়ে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।

হানিফের খালাত ভাই মো. রুবেল জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেদীগঞ্জ উপজেলার উলাদিয়া গ্রামে। বাবা মৃত আব্দুল লতিফ। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে মুগদা পাড়া এলাকায় থাকতেন হানিফ।

এদিকে, ঝড়ের সময় রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে মিলি ডি কস্তা (৬০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। মণিপুরি পাড়া এলাকায় থাকতেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সি জানান, সন্ধ্যায় বাসা থেকে হাঁটতে বের হয়েছিলেন মিলি ডি কস্তা। হাঁটতে হাঁটতে লেক রোড এলাকায় পৌঁছলে তার ওপর একটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঝড়ে আহত একজন ঢামেক হাসপাতালে চিকিসাধীন

অন্যদিকে, মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির জানান, শেওড়াপাড়ায় প্রাইভেট কারের চালক দুলাল ঝড়ের সময় একটি নির্মাণাধীন ভবনে অবস্থান করছিলেন। এসময় ওই ভবনের দেয়াল ধসে তার ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে, ঝড়ের সময় কদমতলি বাজারে একটি দোকানের টিন উড়ে গিয়ে গায়ে পড়লে আহত হয়েছেন রিক্শাচালক আব্দুল খালেক (৫২), শনির আখড়ায় গ্লাস পড়ে ইবু (১৩), কদমতলি এলাকায় বাড়ির টিন পড়ে শারমিন আক্তার (৩৫) এবং শনির আখড়ায় গ্লাস পড়ে হযরত আলী (১৭) ও মাজুম হোসেনসহ (১৬) আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ বক্সের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া জানান, ঝড়ের ঘটনায় বিভিন্ন এলাকায় ১৫ থেকে ১৬ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রিকশাচালক খালেকের অবস্থা গুরুতর। আহতদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে।

রমনায় গাছ পড়ে সিএনজিচালক আহত

রোববার সন্ধ্যার হঠাৎ এই ঝড়ে রাজধানীর রমনা এলাকায় হেয়ার রোডেও বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে একজন সিএনজিচালক গুরুতর আহত হয়েছেন।

কাকরাইল মসজিদ পার হয়ে কিছুদূর যেতেই দেখা যায়, সড়কে একটি সিএনজি ও একটি প্রাইভেট কারের ওপর একটি গাছ পড়ে আছে। একটু সামনে গেলে দেখা যায়, আরও একটি গাছ পড়ে রয়েছে দুইটি প্রাইভেট কারের ওপর। এসব গাছের কারণে একটি প্রাইভেট কারের সামনের গ্লাস ভেঙে গেলেও কেউ আহত হননি। তবে সিএনজিচালক মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আশপাশের এলাকায় আরও কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেলের ওপরও গাছ ভেঙে পড়েছে।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলাম বলেন, উপড়ে পড়া গাছ দ্রুত সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সিটি করপোরেশনের লোকজনকে খবর দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় আশপাশের এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া, গাছ পড়ে সড়ক আটকে যাওয়ায় সেখানে যানজটও তৈরি হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এসএসআর/টিআর

ঝড়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর