Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ১১১ সুপারিশের খসড়া


৪ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪৮

ঢাকা: সড়কে দুর্ঘটনা কমানো এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি ১১১ দফা সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে।

বুধবার (৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে খসড়া সুপারিশের ওপর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানান কমিটির প্রধান বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি সংসদ সদস্য শাজাহান খান।

বিজ্ঞাপন

সুপারিশগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, অবিলম্বে সড়ক পরিবহন আইনের বিধিমালা জারি; সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা, সড়ক উন্নয়নে নেওয়া প্রকল্পের ৫ শতাংশ অর্থ সড়ক নিরাপত্তার জন্য রাখা, জেলা ও উপজেলা সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধি, চালক প্রশিক্ষণে সরকারি খরচে ইন্সট্রাক্টর তৈরির কার্যক্রম নেওয়া, ইন্সট্রাক্টর নিয়োগে সরকারি বিভিন্ন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়া, চাকরিতে নারী চালকদের অগ্রাধিকার দেওয়া, ট্রাফিক পুলিশের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ, রাজধানী থেকে রিকশা তুলে দেওয়া, রাইড শেয়ারিং কোম্পানির জন্য গাড়ির সংখ্যা বেঁধে দেওয়া, কেবল লাইসেন্সধারী চালকদের মোটরসাইকেল বিক্রি করা, দৈনিক ভিত্তিতে চালক নিয়োগ না দেওয়া, চালকদের সুনির্দিষ্ট মজুরি নির্ধারণ, রাস্তায় প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজি প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন এবং সড়কে ডিজিটাল মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা।

বৈঠক শেষে শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশের চলমান সমসাময়িক ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হল সড়ক দুর্ঘটনা এবং সড়কের নিরাপত্তা। এর সমাধান করা এখন নৈতিক দায়িত্ব হয়ে পড়েছে। এখন সকলের মতামত নেয়ার জন্য সুপারিশের খসড়া বিআরটিএ এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ১৫ দিন পর তা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন আকারে জমা দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ১৫ দিনের সময় দিয়ে সুপারিশগুলো জনসাধারণের মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব। ওই ১৫ দিনের মধ্যে আমরা আশা করি মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারব। তার মতামত নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।

‘সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা আনয়ন এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটি’র ওই খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস ও শৃঙ্খলা বৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। তবে বুধবার খসড়া চূড়ান্ত করার দিনে ২৩ সদস্যের ওই কমিটির ১৪ জনই অনুপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে মতামত দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পত্রিকা, টেলিভিশনসহ ৪০টি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হলেও কেউ যাননি। এর আগে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পরিবহন মালিক, শ্রমিক, পুলিশ, গবেষক ও বিআরটিএসহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই কমিটি করা হয়।

এই বিষয়ে শাজাহান খান বলেন, সড়কে নিরাপত্তার বিষয়টি শুধু সড়ক পরিবহন মালিক বা সরকারের নয়, সারাদেশের মানুষের। এজন্য সবার মতামত চাওয়া হয়েছিল। আমরা বিভিন্ন সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, তাদের আমরা আবেদন করেছিলাম। তারা আসলে আমরা খুশি হতাম। যারা আসেন নাই তাদের নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। তারপরও যেহেতু আমরা ওয়েবসাইটে দিয়ে দিচ্ছি। তাদের কোনো মতামত থাকলে তারা দিতে পারবেন। আমরা সেটা বিবেচনায় নিয়ে তা আলোচনা করবো।

এই কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ, যিনি জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবং বর্তমান সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত, সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চনও সদস্য হিসেবে আছেন এই কমিটিতে।

উল্লেখ্য, সড়ক নিরাপত্তা ইস্যুতে মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ নেওয়া শাজাহান খানকে এই কমিটির প্রধান করায় ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিলো সরকারের ভেতরে ও বাইরে। অনেকেই ওই সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

 সারাবাংলা/এইচএ/এসবি

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ সড়কে শৃঙ্খলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর