Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিজেএমসিকে ধ্বংস করতে ষড়যন্ত্র করছে কুচক্রি মহল


৬ এপ্রিল ২০১৯ ২২:৪৯

ঢাকা: বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনকে (বিজেএমসি) ধ্বংস করতে একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র করছে বলে জানিয়েছেন বিজেএমসির চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ নাছিম। শনিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সারাবাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি একথা বলেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে বিজেএমসির চেয়ারম্যান নাছিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘অর্থ বিভাগ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে‍ সুনির্দিষ্ট কোনো অর্থ বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত মজুরি কমিশনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু বৈঠকে শ্রমিক নেতাদের দাবি ছিল একটি ফিক্সড তারিখ ঘোষণার। কিন্তু এই নেতাদের টার্গেট খুবই খারাপ। যেসব নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই চাকরিচ্যূত। একসময় সিবিএ নেতা হিসেবে তাদের ভালো ব্যবহার ছিলো না। যার কারণে তাদেরকে চাকুরিচ্যূত করা হয়েছে। তাই আন্দোলনের ধরনে আমি বড় একটি ইস্যু দেখতে পাচ্ছি। রাস্তাঘাট বন্ধ, টায়ার পোড়ানো, ট্রেনে ঢিল মারা এগুলো হলো নাশকতা মূলক প্রয়াস।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘আমি শ্রমিক নেতাদের বলেছি নিজের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারবেন না। বিজেএমসিকে ধ্বংস করা জন্য একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্র করছে। বিজেএমসি রসাতলে যাক এটা তাদের ষড়যন্ত্র। বিজেএমসিকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে এই ধরনের আন্দোলন থেকে সরে আসতে হবে। আত্মঘাতী আন্দোলনে যাওয়া উচিত নয়। এটা শ্রমিক নেতাদের বোঝানো হয়েছে। একই সঙ্গে নেতাদের সতর্ক থাকার জন্য বলেছি।’ এছাড়া তিনি বলেন শ্রমিক নেতাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, সরকার থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বরাদ্দ পাওয়ার পর মজুরি কমিশন গঠন করা হবে। আর বকেয়া মজুরি সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পরিশোধের জন্য তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে পাটকল শ্রমিক নেতারা বলছেন, ‘সকালে সাড়ে তিন ঘণ্টা আর বিকেলে এক ঘণ্টা সিদ্ধান্তের পরও কোনো সমাধান মেলেনি। যার কারণে নেতারা আগামীকাল রোববার সকাল ১০টায় সিবিএ অফিসে আবার আলোচনায় বসবেন। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।’ অন্যদিকে বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে ৭২ ঘণ্টার কর্মসূচি শেষে শনিবার দুই দফায় বিজেএমসির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল ২৫টি পাটকলের ৬০ জন শ্রমিক নেতা।

এদিকে আলোচনা শেষে প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সোহানা শারমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই দফায় আলোচনার পরও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। আমরা আগামীকাল আবার আলোচনায় বসব। এরপর কী করা হবে কিংবা কোনো আন্দোলনে যাওয়া হবে কি না সেটার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তবে বিজেএমসির চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘জুন মাসের আগে মজুরি কমিশন বসাতে পারবেন না। বকেয়া মজুরির বিষয়েও তিনি কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। উনি মন্ত্রণালয়ে আলাপ করবেন, তারপর কবে নাগাদ দিতে পারবেন, তার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেননি। কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত উনার কাছ থেকে আমরা পাইনি। তাই রোববার সকাল ১০টায় সিবিএ কার্যালয়ে বসে পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করবো।’

উল্লেখ্য, ২ এপ্রিল ৭২ ঘণ্টার ধর্মঘট কর্মসূচি শুরু করে খুলনা অঞ্চলের শ্রমিকরা। ৯টি জুটমিলের ৩৩ হাজার শ্রমিক মিলগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রেখে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। যশোরসহ অন্যান্য অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরাও এই কর্মসূচিতে সামিল হয়।

আর শ্রমিকদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়মিত সাপ্তাহিক মজুরি ও বেতন প্রদান, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি এবং উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ (প্রভিডেন্ড ফান্ড)-গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকদের বিমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন ও বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, সেটআপ অনুযায়ী শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাট কেনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করা।

সারাবাংলা/এসজে/এমআই

জুট মিল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর