মাদরাসাছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহার পরিবর্তন
৯ এপ্রিল ২০১৯ ১০:১০
ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহার পরিবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত পরিচয় চার জন ও তাদের সহযোগীকে আসামি করা হয়েছিল এই মামলায়। এবারে অধ্যক্ষকে প্রধান আসামি রেখে আরও সাত জনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করা হয়েছে এই মামলায়। তাদের সঙ্গে আসামি রাখা হয়েছে বোরকা পরিহিত অজ্ঞাতনামা চার জন ও তাদের সহযোগীদের।
সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে মামলাটির এজহার পরিবর্তন করা হয়। এজাহার পরিবর্তন করে যুক্ত করা বাকি আসামিরা হলেন— সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, মাদরাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের।
আরও পড়ুন- ‘ডাইং ডিক্লারেশনে’ শম্পা নামটি বলেছেন ফেনীর মাদরাসা শিক্ষার্থী
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সোমবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আট জনের নাম উল্লেখ করে ও বোরকা পরিহিত চার জনসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা মামলা দায়ের করেন ওই শিক্ষার্থীর ভাই।
মামলার বাদী ওই শিক্ষার্থীর ভাই এজাহারে উল্লেখ করেন, অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে উল্লেখিত আসামিরা পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে তার বোনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মামলার প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা একই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত সাত জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
আরও পড়ুন- মাদরাসা ছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা, ২ দিন পর মামলা
আটক সাত জন হলেন— মাদ্রাসার প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা, পিয়ন নুরুল আমিন, আলাউদ্দিন, সাইদুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন ও আফসার উদ্দিন। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের কাছ থেকেও জবানবন্দি নিয়েছে পুলিশ।
ওসি জানান, মামলাটির রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেফতারে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশও মাঠে কাজ করছে।
আরও পড়ুন- ‘আর ভিডিও করিছ না, আমার ঝিরে আইনা দে’
এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে লাইফ সাপোর্টে থাকা মেয়েটির শারীরিক অবস্থা ভীষণ নাজুক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার শরীরের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ দগ্ধ এবং ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ তীব্রভাবে দগ্ধ। এ অবস্থায় মেয়েটির জীবন শঙ্কার মুখে রয়েছে বলেই মত চিকিৎসকদের।
নিজ মাদরাসার অধ্যক্ষের কাছে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার পর গায়ে পেট্রোল ঢেলে হত্যার চেষ্টা করা হয় ওই শিক্ষার্থীকে। গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদ্দৌলা ওই শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে ওই অধ্যক্ষকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করছে। তবে শিক্ষার্থীদের অন্য একটি অংশ অধ্যক্ষের শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছে।
আরও পড়ুন- ‘বল সব মিথ্যা, ২৭ তারিখের যৌন হয়রানি মিথ্যা’
এদিকে, শনিবার (৬ এপ্রিল) ওই শিক্ষার্থী সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে গেলে অধ্যক্ষের পক্ষের শিক্ষার্থীরা তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
সারাবাংলা/টিআর
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা মাদরাসা শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টা