নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা: নুর উদ্দিনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার
১২ এপ্রিল ২০১৯ ১২:১৮
ঢাকা: ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় জড়িত সন্দেহে ওই মাদরাসার সাবেক শিক্ষার্থী নুর উদ্দিনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। নুসরাত হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি তিনি।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফেনী জেলা পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার।
আরও পড়ুন- নুসরাত হত্যা মামলা: পৌর কাউন্সিলরসহ ২ আসামি গ্রেফতার
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাতের শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় শুরু থেকেই সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন নুর উদ্দিন। নুসরাতকে যৌন নির্যাতন করা ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও নুসরাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সিরাজ-উদ-দৌলার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তিনি। মাদরাসার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নুর উদ্দিনসহ অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ আর দুয়েকজনকে পাকড়াও করলেই এই ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হবে।
এদিকে, নুসরাতকে যৌন নির্যাতন করার মামলায় গত ২৭ মার্চ গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ সিরাজ। এরপর সোনাগাজীকে অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। স্থানীয়রা বলছেন, অধ্যক্ষের পক্ষে এসব কর্মসূচি আয়োজনের পেছনে নুর উদ্দিন ভূমিকা রেখেছিল। শুধু তাই নয়, অধ্যক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে মাদরাসা থেকে পাস করে বেরিয়ে যাওয়ার পরও সেখানে অবাধ যাতায়াত ছিল নুরের।
আরও পড়ুন- মাদরাসাছাত্রীকে হত্যাচেষ্টা: বোরখা পরা ৪ জনকে খুঁজছে পুলিশ
উল্লেখ্য, নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে কারাগার থেকেই তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। এর মধ্যে গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। পরিবারের অভিযোগ, নুসরাতের পরিবার মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ার কারণেই নুসরাতকে এই পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন- নুসরাতের জানাজায় হাজারও মানুষ, দাদির পাশেই চিরঘুম
এদিকে, আগুনে নুসরাতের শরীরের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। এ অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে, সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিংগাপুরেও নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু তার শরীর দীর্ঘ বিমানযাত্রার উপযোগী না থাকায় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সিংগাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল চিকিৎসা। শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টাকে বিফল করে দিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নুসরাত।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর