বর্ষবরণের আয়োজনে মুগ্ধ লোতে শেরিং, শুভেচ্ছা জানালেন বাংলায়
১৪ এপ্রিল ২০১৯ ১২:৫০
ঢাকা: এর আগেও বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখে অংশ নিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোতে শেরিং। তবে তখন তিনি ছিলেন শিক্ষার্থী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই প্রথম তিনি এলেন বাংলাদেশে, অংশ নিলেন বঙ্গাব্দ বরণের উৎসবে। সেই উৎসব তার মন ছুঁয়ে গেছে বলে জানালেন। সবাইকে নতুন বাংলা বছরের শুভেচ্ছাও জানালেন বাংলা ভাষায়। আরও জানালেন, বাংলাদেশ তার দ্বিতীয় বাড়ির মতো।
রোববার (১৪ এপ্রিল) বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সুরের ধারার আয়োজনে ‘লিভার আয়ুশ-চ্যানেল আই হাজারো কণ্ঠে বর্ষবরণ ১৪২৬’ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- মেসেঞ্জার-ইনবক্সে খবর জানাবে সারাবাংলা News BOT
বর্ষবরণের এই উৎসব আয়োজন করা হয় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে। সকাল সোয়া ৬টার আগেই সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন লোতে শেরিং। গানে গানে বর্ষবরণের এই আয়োজনে পরিবেশন করা হয় দলীয় ও একক সংগীত। লোতে শেরিংয়ের সম্মানে অনুষ্ঠানে ভুটানি ভাষার গানও পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে লোতে শেরিং বাংলা ভাষায় সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, আপনাদের সবাইকে আমাদের পক্ষ থেকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ এরপর তিনি হেসে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা সবাই পান্তা ভাত খাইয়েছেন?’
এই আয়োজনে উপস্থিত হতে পেরে খুবই খুশি হয়েছেন বলে জানান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি আজকে খুব খুশি হয়েছি। এখান থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার জন্য খুব এক্সাইটেড হয়ে আছি। ওইখানে আমি সাত বছর ছিলাম। তারপর ঢাকায় এফসিপিএস করেছি চার বছর। তাই আজকে এখানে আসাটা আমার কাছে দ্বিতীয় বাসায় আসার মতো।
অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, লোতে শেরিং নিজের শিক্ষাজীবন কাটিয়েছেন বাংলাদেশে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। পরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনারেল সার্জারিতে এফসিপিএস ডিগ্রি নেন। শিক্ষাজীবন শেষে দেশে ফিরে যাওয়ার পর অনেক জল গড়িয়েছে। চিকিৎসা শাস্ত্রে পড়ালেখা করলেও এখন রাজনীতিবিদই কেবল নন, দেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে শিক্ষাজীবন বাংলাদেশে কাটানোয় বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতির অনেককিছুই তার চেনাজানা। বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখের সঙ্গেও তিনি আগে থেকেই পরিচিত।
এর আগে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে আসছেন লোতে শেরিং। ওই সময়ই জানা যায়, মূলত পহেলা বৈশাখের আয়োজনে অংশ নিতেই তিনি রাষ্ট্রীয় সফরের জন্য এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহকে বেছে নিয়েছেন।
ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১২ এপ্রিল স্ত্রী ও সফরসঙ্গীদের নিয়ে বাংলাদেশ আসেন লোতে শেরিং। তিনিই প্রথম কোনো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পহেলা বৈশাখ উৎসবে অংশ নিতে এলেন বাংলাদেশে। সরকারের পক্ষ থেকে বৈশাখের উপহার হিসেবে শেরিংকে সিল্কের পাঞ্জাবি এবং তার স্ত্রীকে বেনারসি শাড়ি উপহার দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর