ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর জবানবন্দি নেবেন শুধু নারী ম্যাজিস্ট্রেট
১৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:০৯
ঢাকা: ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের জবানবন্দি নিতে নারী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশে জারি করা এক সার্কুলারে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সার্কুলারটি সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান। তিনি বলেন, ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ সার্কুলার জারি করেছে।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেনের সই করা সার্কুলারে বলা হয়েছে, একজন পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশু তার ওপর সংঘটিত নির্যাতনের বর্ণনা দিতে সংকোচবোধ করে। এমন নির্যাতনের প্রকৃত বিবরণ দিতে তারা ইতস্তত বোধ করে। এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি বাধ্যতামূলকভাবে একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে লিপিবদ্ধ করাতে হবে। এতে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুরা সহজে ও নিঃসঙ্কোচে তাদের ওপর সংঘটিত নির্যাতনের বর্ণনা দিতে পারবে।
সার্কুলারে বলা হয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এ বর্ণিত অপরাধ সংঘটনে ওয়াকিবহাল ব্যক্তির জবানবন্দি ওই আইনের ২২ ধারা অনুযায়ী লিপিবদ্ধ করা হয়। স্পেশাল কমিটি ফর জুডিশিয়াল রিফর্মস খেয়াল করেছে যে, বর্তমানে বেশকিছু ক্ষেত্রে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী বা শিশুদের জবানবন্দি পুরুষ ম্যাজিস্ট্রেট লিপিবদ্ধ করছেন, যা প্রকৃত ঘটনা উঠে আসার ক্ষেত্রে অন্তরায়।
এ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সংঘটিত অপরাধের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব একজন নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়ার জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশিত হয়ে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে সার্কুলারে। তবে সংশ্লিষ্ট জেলায় বা মহানগরীতে নারী ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত না থাকলে অন্য কোনো যোগ্য ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এতে আরও বলা হয়েছে, এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে গিয়ে কোনো সমস্যা বা অসুবিধা দেখা দিলে তা সুপ্রিম কোর্টের নজরে আনতে হবে।
সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম