Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ওয়াসায় অভিযোগ দিয়েও সমাধান পাননি ৬১ ভাগ গ্রাহক


১৭ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:০৪

ঢাকা: ঢাকা ওয়াসায় সেবা সংক্রান্ত অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাননি বলে অভিযোগ করেছেন প্রায় ৬১ ভাগ গ্রাহক। আবার অভিযোগ দিয়ে সমস্যার সমাধান পেতে অনিয়ম-দুর্নীতির শিকার হতে হয়েছে প্রায় ৬২ শতাংশ গ্রাহককে। ওয়াসার বেশিরভাগ গ্রাহকই আবার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন সংক্রান্ত সেবায় সন্তুষ্ট নন।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে টিআইবি’র প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা গবেষণাপত্রে এসব তথ্য জানানো হয়। ঢাকা ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে টিআইবি এই গবেষণাপত্রটি প্রণয়ন করে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- দুর্নীতি নেই, ঢাকা ওয়াসায় এমন জায়গা খুঁজে পায়নি টিআইবি!

ঢাকা ওয়াসার গ্রাহকদের ওপর জরিপ চালিয়ে তৈরি করা টিআইবির গবেষণপত্রে বলা হয়েছে, সেবা সংক্রান্ত সমস্যা বা ত্রুটির কারণে সেবাগ্রহীতাদের ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ অভিযোগ করেছেন ওয়াসায়। এর মধ্যে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ অভিযোগ কর্তৃপক্ষ গ্রহণই করেনি। আর অভিযোগকারী ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রাহক বলছেন, অভিযোগের কোনো সমাধান পাননি তারা। ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ গ্রাহক অভিযোগের পর সমাধান পেলেও তার জন্য তাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। মাত্র ২০ দশমিক ২ শতাংশ গ্রাহক বলছেন, তারা যথাসময়ে বা দ্রুত সমস্যার সমাধান পেয়েছেন।

এদিকে, ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ পানি পয়ঃনিষ্কাশন সেবায় ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছেন এবং তাদের ৬১ দশমিক ৯ শতাংশ অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে। টিআইবি’র গবেষণাপত্রে বলা হয়, এসব অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ হলো ওয়াসা কর্মীদের দায়িত্বে অবহেলা। এছাড়া ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ গ্রাহককে ঘুষ বা নিয়ম-বহির্ভূত অর্থ দিতে হয়েছে ওয়াসার কর্মী বা দালাল চক্রকে। ভৌতিক বিলের শিকার হয়েছেন ২৩ শতাংশ অভিযোগকারী।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ওয়াসার পানি ফুটিয়ে পানযোগ্য করতে বছরে খরচ ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস!

টিআইবির প্রতিবেদন তৈরির জরিপে অংশ নেওয়া গ্রাহকরা বলছেন, পানির সংযোগ নিতে ২০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা, পয়ঃলাইনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা, গাড়িতে করে জরুরি পানি সরবরাহে ২০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা, মিটার কেনা বা পরিবর্তনে একহাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, মিটার রিডিং ও বিল সংক্রান্ত কাজে ৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনে এক থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে তাদের।

এদিকে, ওয়াসার পানি সরবরাহ ও প্রাপ্যতার ভিত্তিতে সেবায় সন্তুষ্ট মাত্র ২৪ দশমিক ২ ভাগ গ্রাহক। ৪৬ দশমিক ২ ভাগ গ্রাহক মোটামুটি সন্তুষ্ট, আর ২৯ দশমিক ৬ ভাগ গ্রাহক অসন্তুষ্ট। তবে পানির মানের ক্ষেত্রে ৪৭ শতাংশ গ্রাহকই অসন্তুষ্ট। এ ক্ষেত্রে ৪৬ দশমিক ২ শতাংশ গ্রাহক মোটামুটি সন্তুষ্ট হলেও সন্তুষ্ট মাত্র ৬ দশমিক ৮ ভাগ গ্রাহক।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পয়ঃনিষ্কাশনের ক্ষেত্রে ,মাত্র ২ দশমিক ২ ভাগ গ্রাহক সন্তুষ্ট, ১৯ দশমিক ৩ ভাগ গ্রাহক মোটামুটি সন্তুষ্ট। এ ক্ষেত্রে ৭৮ দশমিক ৫ ভাগ গ্রাহকই অসন্তুষ্ট। এছাড়া, অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট ৬৭ দশমিক ৩ ভাগ গ্রাহক। এ ক্ষেত্রে ২১ দশমিক ৭ ভাগ গ্রাহক মোটামুটি ও মাত্র ১১ ভাগ গ্রাহক সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন টিআইবিকে। সার্বিকভাবে ওয়াসা নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৪২ দশমিক ৪ ভাগ গ্রাহক মোটামুটি সন্তুষ্ট। এ ক্ষেত্রে ৩৭ দশমিক ৫ ভাগ গ্রাহকই অসন্তুষ্ট, আর সন্তুষ্ট মাত্র ২০ দমমিক ১ ভাগ গ্রাহক।

গবেষণাপত্রে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন সংক্রান্ত বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার জন্য ১০টি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য তিনটি পরামর্শ দিয়েছে টিআইবি।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

টিআইবি ঢাকা ওয়াসা ঢাকা ওয়াসায় অভিযোগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর