Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দোলা-নুসরাতকে এখনো খুঁজে ফেরেন মা-বাবা


১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:২১

ঢাকা: নুসরাত জাহান ও ফারিয়া আক্তার দোলা— প্রতিবেশীর লালসার শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছিল ডেমরার দুই শিশুকে। সন্তান হারানোর সেই ঘটনা যেন এখনও বিশ্বাস করতে পারেননি তাদের মা-বাবারা। এখনও তারা মনে করেন, কোথাও হয়তো বেঁচে আছে তাদের সন্তানেরা। নিজেদের অজান্তেই কখনো কখনো ডেকে ওঠেন নুসরাত, দোলার নাম ধরে।

প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে নির্মম পাশবিকতার শিকার এই দুই শিশুকে হত্যার বিচার চেয়ে আয়োজিত মানববন্ধনে এমন কথাই বলছিলেন নুসরাত ও দোলার মা-বাবারা। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অ্যাকসেস টু হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি মানবাধিকার সংগঠন এই মানববন্ধন আয়োজন করে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- দোলা ডাক্তার হতে চেয়েছিল, ডিপিএস করেছিলেন পোশাককর্মী মা

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ফারিয়া আক্তার দোলার মা পারভিন আক্তার ও বাবা ফরিদুল ইসলাম এবং নুসরাতের মা ফাহিমা বেগম ও বাবা পলাশ মিয়া।

নুসরাতের মা ফাহিমা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়ে মরে নাই, মরতে পারে না। আমার বিশ্বাস হয় না আমার মেয়ে মরে গেছে। মেয়ে হারানো শোকে ওর বাবা মানসিক রোগীর মতো হয়েছে। আর আমার ঘরের আনন্দটাও নিভে গেছে।’

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নুসরাতের মা, পাশেই দোলার মা

ফাহিমা বলেন, নুসরাতের জামা-কাপড়-বই সব আগের জায়গায় আগের মতোই আছে। কিন্তু আমার মা’কে (নুসরাত) দেখিনি অনেকদিন হয়ে গেছে। মেয়ের সেই হাসি এখনো কানে ভেসে আসে। সবসময় মনে হয়, নুসরাত বুঝি আশপাশেই আছে।

পাশেই ছিলেন দোলার বাবা ফরিদুল ইসলাম। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, মেয়ের মৃত্যুর প্রায় চার মাস হয়ে গেছে। ওর মা পাগলের মতো হয়ে গেছে। ঠিকমতো খায় না, কথা বলে না।

বিজ্ঞাপন

ফরিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা গরীর মানুষ। তাই হয়তো আমার মেয়ের হত্যার বিচার এখনো শুরু হয়নি। বিচার চেয়ে আজ চার মাস ধরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছি।’ নুসরাত-দোলাকে হত্যার বিচার যেন দ্রুত শুরু হয়, সেদিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

মানববন্ধনের বক্তরা বলেন, যাত্রাবাড়ী দুই অবুঝ শিশু নুসরাত ও দোলা শুধু নয়, ফেনীর নুসরাত জাহান রাফি, কুমিল্লার সোহাগী জাহান তনু, ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী অরিত্রীসহ প্রতিনিয়তই শিশু-তরুণীরা হত্যা-যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এসব হত্যাকারী ও যৌন নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যেন ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।

গত ৭ জানুয়ারি রাতে ডেমরার কোনাপাড়ার শাহজালাল রোডের নাসিমা ভিলার নিচতলার একটি ঘর থেকে শিশু দোলা ও নুসরাতের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অনুসন্ধানে পুলিশ জানায়, প্রতিবেশী গোলাম মোস্তফা ও তার ভাই আজিজুল বায়ানি লিপস্টিক দেওয়ার কথা বলে শিশু দুইটিকে তাদের ঘরে নিয়ে যায়। ময়নাতদন্তে জানা যায়, দোলাকে ধর্ষণ ও নুসরাতকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়। পরে তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় পরদিন ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নুসরাত ও দোলার বাবা বাদী হয়ে গোলাম মোস্তফা ও আজিজুলকে আসামি করে ডেমরা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দিন রাতেই ডেমরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৯ জানুয়ারি তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।

দোলা ও নুসরাত হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহ পর ঢাকা মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে এ মামলার চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তাতে দুই আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। বর্তমানে মামলার দুই আসামি কারাগারে আছে।

সারাবাংলা/এআই/টিআর

ডেমরায় দুই শিশু হত্যা নুসরাত ও দোলা নুসরাত ও দোলার হত্যাকারীদের বিচার দাবি শিশু দোলা শিশু নুসরাত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর