Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রীলংকায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৭, গ্রেফতার ৭


২১ এপ্রিল ২০১৯ ২০:১৬

ঢাকা: শ্রীলংকায় বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন অন্তত ৪৫০ জন। শ্রীলংকার পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আলাদা আলাদা জায়গায় মোট ৮টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

অষ্টম বিস্ফোরণের পরে রোববার (২১ এপ্রিল) দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে শ্রীলংকা। জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত কারফিউ চলবে।

যে কোনো ধরনের প্রোপাগান্ডা এড়াতে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং মেসেজিং অ্যাপস হোয়াটস অ্যাপ, মেসেঞ্জার। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ২২ ও ২৩ এপ্রিল সরকারি এবং বেসরকারি সব বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো জঙ্গি বা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন হামলার দায় স্বীকার না করায়, এখন পর্যন্ত বিষয়টি পরিষ্কার হয়নি কারা এই ঘটনায় জড়িত।

শ্রীলংকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মন্তব্য করেছেন, আটটি আলাদা জায়গায় হামলা হলেও এর পেছনে কোনো একটি গ্রুপ রয়েছে।

সর্ব শেষ হামলার ঘটনা ঘটে রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে শহরতলীতে। সূত্র জানিয়েছে, এটি ছিল অষ্টম বোমা হামলা এবং প্রাণঘাতী হামলা। এদিন তল্লাশি করতে তিন পুলিশ সদস্য একটি বাসায় প্রবেশ করলে আত্মঘাতী বোমারুরা বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে সবার মৃত্যু হয়। ধসে পড়ে ওই বাসার ছাদ।

রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা

এর আগে তিন বাহিনী প্রধান এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বিশেষ আলোচনা করেছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট। পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) তিনি প্রতিটি ধর্মীয় উপাসনালয়, আবাসিক হোটেল, হাসপাতাল, দূতাবাস এবং ক্যাথলিক নেতাদের নিরাপত্তা জোর করার নির্দেশনা দিয়েছেন। একই সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সিডিএস এর বিভাগীয় প্রধানের পরামর্শ অনুযায়ী, তল্লাশি অভিযান চালুর নির্দেশ দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিনামূল্যে জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এদিকে ঘোষণা করা হয়েছে, নিহতদের সৎকারের যাবতীয় খরচ সরকার বহন করবে।

আগেই সতর্ক করেছিলেন পুলিশ প্রধান

শ্রীলংকায় হামলার বিষয়ে দেশটির পুলিশ প্রধান পুজুথ জয়সুন্দর আগেই সতর্ক করেছিলেন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ১০ দিন আগে দেশব্যাপী সতর্কতা জারি করেছিলেন জয়সুন্দর।

এতে বলা হয়েছিল, গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা ইস্টার সানডে’তে প্রধান প্রধান গির্জায় হামলা করার পরিকল্পনা করছে। ১১ এপ্রিল পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানিয়ে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়।

“বিদেশি একটি গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছিল, কট্টরপন্থি মুসলিম সংগঠন এনটিজে (ন্যাশনাল তৌহিত জামা’য়াত) প্রধান প্রধান গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। সেই সঙ্গে শ্রীলংকার কলোম্বোতে ভারতীয় হাই কমিশনেও হামলার পরিকল্পনা রয়েছে এনটিজে‘র।”

নিখোঁজ দুই বাংলাদেশি, নিরাপদে থাকার আহ্বান হাইকমিশনের

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, শ্রীলংকার কলম্বোতে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় এক শিশুসহ দুই বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি বলেন, “বোমা হামলার ঘটনায় আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করেছি। নিখোঁজ দুইজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।’

এদিকে শ্রীলংকায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের খোঁজ-খবর নিতে হটলাইন সার্ভিস চালু করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশি কারো কোনো সহযোগিতা দরকার হলে কিংবা কারো ক্ষয়ক্ষতি হলে তা হাইকমিশন কর্মকর্তা মোসা. মাহমুদাকে জানাতে বলা হয়েছে। যোগাযোগের নম্বর +94712406313

বিজ্ঞাপন

শ্রীলংকায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের নিরাপদে থাকতে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, আমরা বাংলাদেশিদের নিরাপদে থাকতে বলেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যদের নির্দেশনা মেনে চলতে বলেছি। মূলত, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সবাই যেন ঘরে থাকে, সেটাই বলেছি আমরা।

রোববার (২১ এপ্রিল) খ্রিষ্টানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে’তে শ্রীলংকার তিন গির্জা ও তিন হোটেলে সিরিজ বোমা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। সর্ব প্রথম হামলার খবর পাওয়া যায় রাজধানী কলম্বোর সেইন্ট অ্যান্থনি’স গির্জায়। এর কিছুক্ষণ পরই নেগোম্বোর কাতুওয়াপিতিয়ার সেইন্ট সেবাস্টিয়ান’স গির্জায় হামলার তথ্য পাওয়া যায়। দ্বিতীয় হামলার কিছু পরেই কলম্বোর শাংরি-লা হোটেল, কিংসবুরি হোটেল ও সিনামন গ্র্যান্ড হোটেল এবং বাত্তিচালোয়ায় আরেকটি গির্জায় বোমা হামলার তথ্য জানা যায়।

সারাবাংলা/এটি

নিহত শ্রীলঙ্কা হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর