পুতিনের সাথে বৈঠক করবেন কিম
২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:২৩
চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে রাশিয়া যাবেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) একথা জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত গণমাধ্যম। এছাড়া, এক রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভ্লাদিবস্তক শহরে বৈঠকে বসবেন দুই নেতা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া নিয়ে নিজের অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিদেশি শক্তির সমর্থন নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে এই সফর করবেন কিম।
উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে দ্বিতীয় দফা সম্মেলন ব্যর্থ হয়। উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়েও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি দুই নেতা। বিশ্লেষকরা জানিয়েছে, এ কারণেই অন্যান্য বিদেশি শক্তির দ্বারস্থ হচ্ছেন কিম।
উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, খুব শিগগিরই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে, বৈঠকটির জন্য কোনো তারিখ বা স্থানের বিষয়ে কিছু জানায়নি সংস্থাটি।
এদিকে, সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ার কোমারসান্ট পত্রিকা জানিয়েছে, আগামী ২৫ এপ্রিল ভ্লাদিভস্তক শহরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি ক্রেমলিন। তবে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার (২২ এপ্রিল) সাংবাদিকদের বলেন, এপ্রিলের শেষের দিকে পুতিন ও কিমের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকটির তাৎপর্যতা
রাশিয়া বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তর কোরিয়াকে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বাতিল করতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ সংক্রান্ত একাধিক উদ্যোগেও অংশগ্রহণ করেছে রাশিয়া। এ বিষয়ে দুই কোরিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাশাপাশি ছয় পক্ষের আলোচনায় অংশ নিয়েছিল দেশটি। ২০০৯ সালে সর্বশেষ ছয় পক্ষীয় আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের জানামতে, দুই নেতার মধ্যে রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিম ইন-চুল বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে রাশিয়া ও আমরা একই মত পোষণ করি। আমার প্রত্যাশা, এই বৈঠক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এদিকে, কিমের জন্য বৈঠকটি ভিন্ন তাৎপর্যতা বহন করে। ফার ইস্টার্ন ফেডারেল ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক আরতিয়োম লুকিন বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামের রাজধানী হানোইয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যর্থ সম্মেলনের পর কিম সম্ভবত এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, তার হাতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আরও অপশন রয়েছে।
লুকিন বলেন, কিম সম্ভবত নিজেকে ওয়াশিংটন, বেইজিং ও সিউলের ওপর খুব নির্ভরশীল দেখাতে চান না।
অন্যদিকে, রাশিয়ার জন্য বৈঠকটির তাৎপর্যতা আরও বেশি। লুকিন জানান, এই বৈঠকের মাধ্যমে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে একটি প্রধান খেলোয়ার হিসেবে রাশিয়া আবারও নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে। রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্মান প্রমাণের জন্য এ বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সারাবাংলা/আরএ