শ্রীলংকায় আত্মঘাতী হামলার নেপথ্যে স্থানীয় বিত্তশালী পরিবার
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৩:০৪
কালো গোলমরিচ, সাদা গোলমরিচ, জায়ফল, লবঙ্গ আর ভ্যানিলা বিক্রি করে ধনকুবেরদের তালিকায় যোগ দিয়েছিল মোহাম্মদ ইউসুফ ইব্রাহিম। তার পরিবার বাস করতো সাদা এক ম্যানশনে। চড়তো বিএমডব্লিউ গাড়িতে। সাবেক প্রেসিডেন্টসহ শ্রীলংকার উপরমহলে বেশ ভালো যোগাযোগ ছিল তার। সবার চোখেই সম্মানের পাত্র হিসেবেই বিবেচিত ছিল সে। কিন্তু গত রোববার (২১ এপ্রিল) থেকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন তিনি। সেদিন আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে শিশুসহ মানুষ হত্যা করেছে তার দুই সন্তান ও এক পুত্রবধূ।
রোববার ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকাজুড়ে চার গির্জা, তিন হোটেল ও এক বাড়িতে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। এদের মধ্যে আত্মঘাতী হামলাকারীও ছিল।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সেসব আত্মঘাতী হামলাকারীদের মধ্যে ছিল ইউসুফ ইব্রাহিমের দুই সন্তান- ইলহাম ও ইনসাফ আহামেদ ইব্রাহিম। তাদের একজন সাংগ্রিলা হোটেলে হামলা চালিয়েছে। এছাড়া, তাদের একজনের গর্ভবতী স্ত্রী তার দুই সন্তানসহ নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক তদন্ত শেষে পুলিশ এসব কথা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- শ্রীলংকায় এবার আদালতের পেছনে বিস্ফোরণ
উল্লেখ্য, ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকার চার গির্জা, তিন হোটেল ও বাড়তে চালানো বোমা হামলায় অন্তত ৩৫৯ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচ শতাধিক। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশিসহ অন্তত ৩৯ জন বিদেশি রয়েছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস।
শ্রীলংকা পুলিশ মোট আট হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই উচ্চ-শিক্ষায় শিক্ষিত ও ধনী পরিবারের সন্তান।
ভারতীয় এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার জেরে ইউসুফকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে শ্রীলংকা পুলিশ।
দুই সন্তানকে পাশে রেখে গর্ভবতী পুত্রবধূর আত্মঘাতী হামলা
এদিকে, তদন্তকারীরা জানান, রোববার প্রাথমিক পর্যায়ে গির্জা ও কলম্বোর হোটেলগুলোয় হামলার পর ইউসুফের বাড়তে তল্লাশি অভিযান চালায় স্থানীয় পুলিশ। সেসময় ইউসুফের দুই সন্তানের একজনের স্ত্রী তার দুই সন্তানকে পাশে রেখে আত্মঘাতী হামলা চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য, দুই শিশু ও হামলাকারী নিহত হয়।
উল্লেখ্য, হামলার তদন্তে শ্রীলংকার তদন্তকারীদের সহায়তা করছে এফবিআই।
সারাবাংলা/আরএ