সম্পর্ক জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিলেন পুতিন-কিম
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:০১
প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগত পর্যায়ে সাক্ষাৎ করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রুশ শহর ভ্লাদিবস্তকে এই দুই নেতা সাক্ষাৎ করেন। খবর বিবিসির।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পুতিন এই ইস্যুতে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে, বৈঠক শেষে কিম জানিয়েছেন, পুতিনের সঙ্গে তার একটি অর্থবহ বৈঠক হয়েছে। তাদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও বিভিন্ন চলমান ইস্যু মত আদান-প্রদান হয়েছে।
পুতি জানান, তারা দুই কোরিয়ার সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা করেছেন। দেশ দুইটির মধ্যকার অবস্থার আরও উন্নতি সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিতে বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাশিয়ায় পৌঁছেন কিম।
বৈঠকটি নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ছয়-পক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমেই কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক জটিলতা দূরীকরণের একমাত্র কার্যকর পদ্ধতি। উল্লেখ্য, ২০০৩ সাল থেকে শুরু হওয়া ছয়-পক্ষীয় আলোচনা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। সর্বশেষ এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। আলোচনার অংশীদাররা হচ্ছেন- দুই কোরিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপান।
বৈঠকটির তাৎপর্যতা
রাশিয়া বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তর কোরিয়াকে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি বাতিল করতে আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ সংক্রান্ত একাধিক উদ্যোগেও অংশগ্রহণ করেছে রাশিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের জানামতে, দুই নেতার মধ্যে রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিম ইন-চুল বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের সম্পূর্ণ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে রাশিয়া ও আমরা একই মত পোষণ করি। আমার প্রত্যাশা, এই বৈঠক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
এদিকে, কিমের জন্য বৈঠকটি ভিন্ন তাৎপর্যতা বহন করে। ফার ইস্টার্ন ফেডারেল ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপক আরতিয়োম লুকিন বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামের রাজধানী হানোইয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যর্থ সম্মেলনের পর কিম সম্ভবত এটা প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন যে, তার হাতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও আরও অপশন রয়েছে।
লুকিন বলেন, কিম সম্ভবত নিজেকে ওয়াশিংটন, বেইজিং ও সিউলের ওপর খুব নির্ভরশীল দেখাতে চান না।
অন্যদিকে, রাশিয়ার জন্য বৈঠকটির তাৎপর্যতা আরও বেশি। লুকিন জানান, এই বৈঠকের মাধ্যমে কোরীয় উপদ্বীপের পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণে একটি প্রধান খেলোয়াড় হিসেবে রাশিয়া আবারও নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে। রাশিয়ার আন্তর্জাতিক সম্মান প্রমাণের জন্য এ বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সারাবাংলা/আরএ