পড়াশোনা থেকে আনন্দ চলে গেছে : শিক্ষামন্ত্রী
২৫ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:৫০
ঢাকা: শিক্ষা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে আরও আনন্দময় করে তোলার আহ্বান জানিয়েছের শিক্ষমন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনা থেকে আনন্দ চলে গেছে। সেই আনন্দ আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। পাঠের প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে হলে আনন্দ দিয়ে শিক্ষাদান করতে হবে।’ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলা একাডেমিতে এক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) আয়োজিত শিক্ষক সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এই পরামর্শ দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তার সঙ্গে বড় করে তুলতে পরামর্শ দিয়ে দীপু মনি আরও বলেন,যেসব শিশুরা প্রশ্ন করে, কথা বলতে চায় দয়া করে তাদের থামিয়ে দেবেন না। এদের বুদ্ধিবৃত্তিকে উৎসাহিত করুন। কারণ এরাই ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। এদের যোগাযোগ সক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করুন।
শিশুদের চিন্তাশীল ও মেধার বিকাশে সহায়তা করার কথা উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, স্কুলেই তাদের চিন্তার ভিতটি গড়ে দিতে হবে। সমস্যা সমাধান করার যোগ্যতা বাড়াতে হবে। এমন অনেককে আমি চিনি যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছে, তবে কি শিখে এসেছে সেটি বুঝিয়ে বলতে পারেন না। এমনটা যেন না হয়। যা কিছু শিখছে তা যেন প্রয়োগ করতে পারে সেভাবে শিক্ষা দেবেন।
শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে দীপু মনি বলেন, ইনোভেশন বা উদ্ভাবন ছাড়া কোন জাতি এগিয়ে যেতে পারেনি। শিক্ষা হচ্ছে উদ্ভাবন ও উন্নতির একমাত্র মাধ্যম। এখানে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আমাদেরকে বুঝতে হবে কোথায় আমাদের শক্তি। বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ১৯৭০ সালের ইশতেহারের মতো আমিও চাইব শিক্ষায় যেন জিডিপির কমপক্ষে চার শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এ সময়, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সফল করতে হলে স্কুলিংয়ে সময় না দিয়ে লার্নিং-এ সময় দেওয়ার অনুরোধও করেন শিক্ষামন্ত্রী।
একই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শিক্ষকদের মান কিভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। স্কুলের পরিচালনা পর্ষদে শিক্ষা অনুরাগী মানুষদের যুক্ত করতে হবে। স্কুলের ব্যবস্থাপনা করতে এসে অপরাজনীতি করা যাবে না। না হলে আমরা সামাজিকভাবে ব্যর্থ হয়ে যাবো। সত্যিকারের নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়ে যাবে।
এটুআই আয়োজিত শিক্ষক সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই মন্ত্রী ছাড়াও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছেন এটুআই-এর পলিসি এডভাইসর আনীর চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, এবারের শিক্ষক সম্মেলনে পাঁচজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষককে সরকারের পক্ষ থেকে ল্যাপটপ দেওয়া হয়। পাশাপাশি শিক্ষাদানে অবদান রাখায় ৪৩ জন শিক্ষককে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে, ‘ফিউচার অফ এডুকেশন ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে শিক্ষা বিষয়ক একটি রূপকল্পের মোড়কও উন্মোচন করা হয়।
সারাবাংলা/টিএস/এনএইচ