‘যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি বলেই জঙ্গিরা কোনো সুযোগ পাচ্ছে না’
২৬ এপ্রিল ২০১৯ ২০:৪৭
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সম্পর্কে সবসময় উদ্বিগ্ন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। হলি আর্টিজানের পর থেকে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণ করে রাখছি। তারপরও শঙ্কা অবশ্যই আছে। আমরা সবসময় যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি বলেই জঙ্গিরা এই ধরনের কোনো সুযোগ পাচ্ছে।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে ব্রুনেই সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলেন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা চিন্তা করেন নিউজিল্যান্ডের মতো একটা শান্তিপূর্ণ দেশ, সেখানে পুলিশও ব্যবহার করার লাগে না। সেরকম একটা দেশে জঙ্গিবাদী হামলা ঘটে। আর বাংলাদেশে তো সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদী ঘটনা লেগেই আছে। ১৯৭৫ সালে যেভাবে জাতির পিতাকে হত্যা, ৩ নভেম্বর জেলখানা হত্যা,এগুলো তো সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের পর্যায়ে পড়ে।’
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মানুষের ওপর নির্যাতনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালে নির্বাচনের পর কিভাবে মানুষের ওপর অত্যাচার করা হয়েছিল? তারপর আসেন অগ্নিসন্ত্রাস। ২০১৩ সালের শেষ দিক থেকে ২০১৪ ও ২০১৫ সাল পর্যন্ত।’
২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব থেকে বড় কথা প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা করা। যে গ্রেনেড ব্যবহার করা হয় যুদ্ধের ময়দানে, সে গ্রেনেড ব্যবহার করা আমাদের একটা র্যালিতে। যে র্যালি ছিল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ২৪ জানুয়ারি ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে আমাদের সভায় গুলি চালানো হল। দুর্ভাগ্য হলো বাংলাদেশে অনবরত এই অবস্থা হয়েছে। আর আমরা তো সেই সন্ত্রাসের শিকার। ১৫ আগস্ট আমরা সব হারালাম। তারপর এই শ্রীলংকায় আমাদের পরিবারের এক আপনজন মারা গেল।’
‘২০১৩ সালের শেষদিক থেকে নির্বাচন ঠেকানোর নামে অগ্নিসন্ত্রাস শুরু হল, সেটা চলল ২০১৫ সাল পর্যন্ত। সেই অগ্নিসন্ত্রাস তো আরেকটা পথ দেখাল’, বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা।
এখন নুসরাতকেও অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হতে হলো। তারই শিক্ষক তাকে আগুন দিয়ে পোড়ানোর ব্যবস্থা করল দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সন্ত্রাসের ঝুঁকি তো আছেই। আমি এটুকু বলতে পারি আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা চমৎকার কাজ করে যাচ্ছে। গতকালও আমাদের সমস্ত গোয়েন্দা সংস্থা এবং বাহিনী প্রধানদের নিয়ে সংসদ থেকে এখানে এসে (গণভবন) সেই ৮টা থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত সভা করেছি। আমরা সবসময় সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
‘আমি জানি, এটা শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা বা গোয়েন্দা দিয়ে হবে না, সবাই মিলে করতে হবে। এই জন্যই আমি দেশবাসীকে আহ্বান করেছি, একটা জনমত সৃষ্টি করার’ বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ঠিক জানি না, এই সুইসাইডল অ্যাটাক করে তারা কি পাচ্ছে? নিজেরা কি পাচ্ছে বা দেশকে কি দিচ্ছে, নিজের বাবা-মাকে কি দিচ্ছে? আমি সবসময় বলে যাচ্ছি, জঙ্গিবাদে যারা লিপ্ত তাদের কোন ধর্মও নাই, তাদের কোন দেশও নাই। তাদের কিছুই নাই।’ এসময় জঙ্গিবাদের সঙ্গে উচ্চবিত্ত পরিবার ও ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত হওয়ার ব্যাপারে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
কোনো দল ভাঙা আমার নীতি না: প্রধানমন্ত্রী
কে নেতৃত্বে আসবে, এটা দল ঠিক করবে: প্রধানমন্ত্রী
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
যুগের প্রয়োজনেই অনলাইন পত্রিকা, অভ্যস্ত হতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির এমপিদের শপথ নিতে সরকারের কোনো চাপ নেই: প্রধানমন্ত্রী
সারাবাংলা/এনআর/এমও
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা অগ্নিসন্ত্রাস জঙ্গি শেখ হাসিনা শ্রীলংকা হামলা