Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

থানার সীমানা জটিলতায় তথ্য ঘাটতি, র‌্যাব বলছে জঙ্গিরা আগেই ছিল


২৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:২১

ঢাকা: রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকায় জঙ্গি আস্তানা পরিদর্শন শেষে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন, জঙ্গিরা এক মাস আগেই টিনশেট বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে ভাড়াটিয়ার কোনো তথ্য ছিল না।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, থানার সীমানা নিয়ে জটিলতায় বন্ধ রয়েছে ওই এলাকার ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম।

বিজ্ঞাপন

মোহাম্মদপুর থানার বছিলা বিট পুলিশের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন মিয়া জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছর মোহাম্মদপুর থানা থেকে ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। থানার সীমানা জটিলতা কারণে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এই কর্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল, চার মাস আগেও মেট্রো হাউজিংয়ের এখানে একটি গরুর খামার ছিল। মাদকসেবীদের উৎপাতে জমির মালিক আব্দুল ওহাব মিয়া খামারটি বন্ধ করে দেন। এরপর থেকে জায়গাটি খালি পড়েছিল। জায়গাটি কাটাশুর মৌজার অংশ। তবে এখানকার মামলা ও জিডি হাজারীবাগ থানা পুলিশও নেয়। আমাদের পাশাপাশি তারাও দায়িত্ব পালন করে।

তবে এই তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম হোসেন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, জঙ্গি আস্তানাটির পাশে একটি ছোট খাল রয়েছে। এটাই সীমানা। খালের এক পাশে হাজারীবাগ এবং অন্য পাশে মোহাম্মদপুর থানা এলাকা। ঘটনাস্থল আমাদের এলাকা না হওয়ায় হাজারীবাগ থানা পুলিশ কখনো ওই এলাকার ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করেনি।

জঙ্গি আস্তানা

ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজীব। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই ওয়ার্ডে যখন ভোট হয় তখন হাজারীবাগ থানা পুলিশ ডিউটিতে থাকে। তবে এখানকার বাসিন্দারা মোহাম্মদপুর এলাকার ভোটার। তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রেও থানা মোহাম্মদপুর লেখা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সীমানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। সচিবালয় থেকে শুরু করে সব জায়গায় আবেদন করেছি আমি। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি।

বিজ্ঞাপন

মেট্রো হাউজিং এলাকার মুদি দোকানি সুজন মিয়া। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ওই এলাকায় বাস করেন। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, “সীমানা নিয়ে ঠেলাঠেলি অনেক দিন ধরেই। সমাধান হয় না। ভাড়াটিয়ার তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ, আমাদেরটা হয়নি।“

জঙ্গি আস্তানাটির পশ্চিম দিকে সীমানা প্রাচীরের সঙ্গেই রয়েছে আরেকটি গরুর খামার। এর দেখাশোনা করেন মিন্টু মিয়া। প্রায় চার বছর যাবৎ ফরিদপুরের বাসিন্দা তালুকদার শুকুর আলীর খামারটি দেখাশোনা করছেন তিনি। তার স্ত্রী রহিমা বেগম এবং সন্তান মিন্টু মিয়ার সঙ্গে থাকেন।

মিন্টু মিয়া বলেন, তিন বছর আগে সোহাগ এবং তার স্ত্রী মৌসুমী এখানে আসেন। তারা জমি এবং খামার দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। ১৫-২০ দিন আগে আব্দুল ওহাব মিয়া টিন দিয়ে ঘিরে এখানে মসজিদ নির্মাণ করেন। মাত্র ঘরের লোকজন নামাজ পড়তেন। রহিমা বেগম জানিয়েছেন, হাঁস হারিয়ে যাওয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় তিনি আশেপাশে খুঁজতে বের হন। ইশার নামাজের কিছু আগে তিনি ওই বাড়িতেও গিয়েছিলেন।

সারাবাংলার প্রশ্নের জাবাবে তিনি জানান, মসজিদে তখন দুইজন নামাজ পড়ছিলেন। সেখানে ওহাব মিয়াসহ মোট ছয়জন লোক ছিলেন। মৌসুমী তখন রান্না করছিল। রহিমার প্রশ্নের জবাবে মৌসুমী বলেন, হুজুরদের খেতে দিতে হবে, তাই রান্না হচ্ছে।

মসজিদের উত্তর পাশে ঢাকা স্টিল নামে একটি ওয়ার্কশপের মালিকাধীন প্লটে রয়েছে আরেকটি টিনশেড। ওই টিনশেডে পরিবার নিয়ে বাস করেন ঢাকা স্টিলের কর্মচারী জোনায়েদ আহমেদ ও শফিকুল ইসলাম। জোনায়েদ আহমেদ বলেন, তিন দিন আগে প্যান্ট-শার্ট পরা দুইজন ছেলেকে এখানে যাতায়াত করতে দেখি। তাদের প্রশ্ন করলে জানায়, তারা এখানে ভাড়া থাকে।

শফিকুলের স্ত্রী হাফসা বেগম জানান, এখন যেখানে মসজিদ, সেখানেই সোহাগ-মৌসুমী থাকতো। মসজিদ করার সময় দক্ষিণ দিকে আরেকটি রুম করে তাদের থাকতে দেওয়া হয়। মসজিদের ইমাম সাহেবেরও এখানে পরিবার নিয়ে ওঠার কথা ছিল। সেই ঘরটিতেই সম্ভবত ওই দুইজন থাকছিলেন।

** জঙ্গি আস্তানা সন্দেহ: ঘটনাস্থলে কমান্ডো টিম, আটক ৩

সারাবাংলা/এটি

জঙ্গি আস্তানা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর