মিয়ানমারে ফিরে যাওয়াই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান
৩০ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:৫৮
ঢাকা: রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারের তৈরি। বাংলাদেশের একাধিক আশ্রয়কেন্দ্রের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদে এবং পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ায় এই সংকটের সমাধান। বেসরকারি উন্নয়নমূলক সংস্থা ব্র্যাক আয়োজিত ‘রিফ্লেকশন অব রোহিঙ্গা ক্রাইসিস: সিন্স অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে, যেন রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ফেরার জন্য মিয়ানমার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে বাধ্য হয়।
ব্র্যাকের পরিচালক সাজেদুল হাসানের সঞ্চালনায় কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, এনজিও ব্যুরোর মহাপরিচালক কে এম আব্দুস সালাম, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টিফেন করেস।
এ ছাড়া হার্ভার্ড এফএক্সবি সেন্টার ফর হেলথ অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সহকারী অধ্যাপক ড. সাচিথ বালসারি কর্মশালায় প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগ দিয়ে ‘হোয়াট ইজ দ্য কেরিং ক্যাপাসিটি অব কক্সবাজার?’ শীর্ষক একটি গবেষণা কাজের ফলাফল উপস্থাপন করেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গা বিষয়ক কাজের মূল বিষয়ই হচ্ছে, তাদেরকে মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান। তাই মিয়ানমারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইনে মিয়ানমার যা করেছে তা জাতিগত নিধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি পুরোপুরি গণহত্যা। তাই মিয়ানমারের সংশ্লিষ্টদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারের মুখোমুখি অবশ্যই হতে হবে।’
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ছেলেমেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, এই তথ্য সঠিক না। দুই তৃতীয়াংশ ছেলেমেয়েরা আশ্রয় শিবিরে লেভেল-টু পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় বার্মিজ এবং ইংরেজি ভাষায় শিক্ষা নিচ্ছে। খুব শিগগির লেভেল-থ্রি চালু হবে। আর লেভেল-ফোর ও ফাইভ চালু করা নিয়ে আলোচনা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আশ্রয় শিবিরগুলোর নারীরা কাজের কোনো সুযোগ পাচ্ছে না, এমন তথ্যও সঠিক নয়। কেন না অনেক রোহিঙ্গা নারীই স্বেচ্ছাসেবী একাধিক কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত।’
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি স্টিফেন করেস বলেন, ১৯৭০ সালে রোহিঙ্গারা নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এরপর ১৯৯০, ২০১২, ২০১৬ সালে এসেছে। সবশেষ ২০১৭ সালে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সদস্য বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এই সংকট মিয়ানমারের সৃষ্টি করা, যার সমাধানও মিয়ানমারের হাতেই।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই