মোংলা-পায়রায় ৭, চট্টগ্রামে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত
২ মে ২০১৯ ১০:১৪
ঢাকা: অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যা নাগাদ এই ঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ কারণে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজারকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিফ্রিংয়ে এ তথ্য জানান, অধিদফতরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ।
ব্রিফিং থেকে জানানো হয়, ভোলা, বরগুনা পটুয়াখাল, বরিশাল, পিরোজপুর ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং আশপাশের চর ও দ্বীপ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। অন্যদিকে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও এর আশপাশের চর ও দ্বীপ থাকবে ৬ নম্বর সংকেতের আওতায়।
সামগ্রিক ঝড়ের প্রভাবে ভোলা, বরগুনা পটুয়াখাল, বরিশাল, পিরোজপুর ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি জলোচ্ছাসে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানান আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক। তিনি বলেন, এসব স্থানের উপর দিয়ে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার বেড়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব অঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ওপর ফণীর মূল আঘাত আসতে পারে বলে জানান আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক। তবে ঝড়ের গতিপথ ও গতি পরিবর্তনশীল জানিয়ে তিনি বলেন, এমনও হতে পারে যে এটি আরও আগেই আঘাত হানবে।
আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ফণী বৃহস্পতিবার ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিলো। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৬০ কিলোমিটার। যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়া আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর কেন্দ্রের কাছের সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
ভারতের ফণী সতর্কতা:
গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ভারতে আঘাত হানতে যাচ্ছে ফণী। বর্তমানে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে প্রায় ২৭০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। গত কয়েকদিনে ঘূর্ণিঝড়টি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এই সময়ের মধ্যে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠবে বলে ধারণা করছেন ভারতের আবহাওয়াবিদরা। মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন’র এক প্রতিবেদনে এমনটা বলা হয়েছে।
সিএনএন জানায়, বুধবার (১ মে) ঘণ্টা প্রতি ফণীর গতিবেগ ছিল ১৯৫ কিলোমিটার। সাফির-সিম্পসন স্কেল অনুসারে, এই গতির কোনো ঘূর্ণিঝড় ক্যাটাগরি ৩ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুসারে, সর্বশেষ ২০১৪ সালে ভারতে এই মাত্রার একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্মুখীন হয়েছিল।
ভারতের আবহাওয়া অধিদফতর অনুসারে, ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতিবেগ নিয়ে বৃহস্পতিবার (২ মে) উড়িশ্যায় ও শুক্রবার (৩ মে) অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আঘাত হানবে ফণী। তবে পূর্ণ শক্তি নিয়ে সবার আগে শুক্রবার উড়িশ্যায় আঘাত হানবে বলে ধারণা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে শনিবার (৪ মে) পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িশ্যায় ভারী বৃষ্টিপাত ও বিপজ্জনক সামুদ্রিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এদিকে, উড়িশ্যায় বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
সারাবাংলা/এসএমএন