জুলহাস-তন্ময়কে হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল যেকোনো দিন
১৩ মে ২০১৯ ১৩:১৯
ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানে ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলার চার্জশিট যেকোনো সময়ে আদালতে আসতে পারে।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, চার্জশিটটি অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে যে কোনো সময় সেটি আদালতে পাঠানো হবে।
মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অফিসার ও ইউএস এইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তন্ময়কে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ১৩ জন অংশ নিয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
অভিযুক্তদের মধ্যে আটজনের নাম ঠিকানা পাওয়া গেলেও বাকি পাঁচজনের শুধু সাংগঠনিক নাম পাওয়া গেছে। পূর্ণ নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এর ফলে আটজনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) চার্জশিট তৈরি করেছে।
ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, মামলার অভিযুক্তরা হলেন, আনসার আল ইসলামের মিডিয়া শাখার প্রধান এবং ইন্টেলিজেন্স সদস্য মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মান (২৫), সামরিক শাখার সদস্য ও সমন্বয়ক মো. আরাফাত রহমান (২৪), ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রধান শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), সামরিক শাখার সদস্য আসাদুল্লাহ ওরফে ফয়সল (২৫), সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (৪২), আকরাম হোসেন (৩০), সাব্বিরুল হক চৌধুরী (২৬) ও ৮. মো. জুনাইদ আহমদ ওরফে মাওলানা জুনেদ আহম্মদ ওরফে জুনায়েত (২৬)।
অভিযুক্তদের মধ্যে প্রথম চারজন কারাগারে, বাকী চারজন পলাকত।
চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি মধ্যেরাতে আসামি আসাদুল্লাহকে গ্রেফতারের পর এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসির পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের মোট ১৩ জন সদস্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। দুইটি গ্রুপের সমন্বয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। একটি কিলিং গ্রুপ অন্যটি ইনটেল গ্রুপ। কিলিং গ্রুপের পাঁচ সদস্যের চারজনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, সমকামিতায় সমর্থন দেওয়ার জের ধরেই সমকামিদের অধিকার বিষয়ক পত্রিকা ‘রূপবান’ এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তন্ময়কে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে প্রবেশ করে ইউএসএইড কর্মকর্তা এবং সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র মামলাটি দায়ের করেন।
নিহত জুলহাস বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের আগে ‘রূপবান’ সম্পাদনার পাশাপাশি জুলহাজ উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডিতে কাজ করতেন।
সারাবাংলা/এআই/এসএমএন