ইসরাইলি হ্যাকারদের কবলে হোয়াটসঅ্যাপ, আপডেটের পরামর্শ
১৪ মে ২০১৯ ১২:৫৮
সাইবার হামলার শিকার হয়েছে ফেসবুক মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। হ্যাকাররা হোয়াটসঅ্যাপের একটি ত্রুটি ব্যবহার করে গোপনে ব্যবহারকারীদের ফোনসহ বিভিন্ন ডিভাইসে একটি নজরদারি অ্যাপ ইন্সটল করেছে। সোমবার (১৩ মে) হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, একটি ইসরাইলি সংস্থা এই সাইবার হামলা চালিয়েছে। খবর বিবিসির।
হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, এই হামলায় নির্দিষ্ট কয়েকজন ব্যবহারকারীকে টার্গেট করা হয়েছে। তবে সোমবার হোয়াটসঅ্যাপ সতর্কতা অবলম্বন করে তাদের সকল ব্যবহারকারীকেই অ্যাপটি আপডেট করার আহ্বান জানিয়েছে। শুক্রবার (১০ মে) তারা তাদের অ্যাপের ত্রুটিটি সংশোধন করেছে।
এক বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, খুবই উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারকারী হ্যাকাররা এই হামলা চালিয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে এই হামলার আবিষ্কার করে তারা।
সোমবারের বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, হামলায় একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার ছাপ পাওয়া গেছে যারা সাধারণত বিভিন্ন দেশের সরকারদের সঙ্গে গুপ্তচরবৃত্তি করার জন্য প্রয়োজনীয় স্পাইওয়ার সরবরাহ করে থাকে। ওইসব স্পাইওয়ার ব্যবহার করে কোনো টার্গেটের মোবাইল ফোনের অপারেটিং সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
এদিকে দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাটি পরিচালনার পেছনে ইসরাইলি নিরাপত্তা সংস্থা এনএসও জড়িত রয়েছে।
হোয়াটসঅ্যাপের নিরাপত্তা টিম বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা চলতি মাসের শুরুতে হামলার বিষয়টি আবিষ্কার করে। এ বিষয়ে সবার আগে মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে অবহিত করা হয়। পাশাপাশি নির্দিষ্ট কয়েকটি নিরাপত্তা সংস্থা ও মার্কিন বিচার বিভাগকেও অবহিত করা হয়।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস আরও জানায়, হ্যাকাররা হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস কলিং সেবা ব্যবহার করে কোনো টার্গেটকে ফোন দিতো। এক্ষেত্রে ওই টার্গেট ফোন না ধরলেও তার ফোনে নজরদারি অ্যাপটি ইন্সটল হয়ে যেত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফোনের কল লগ থেকে যে নাম্বার থেকে ফোন এসেছে সেটি গায়েব হয়ে যেত।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে হামলাকারী সংস্থা হিসেবে এনএসও’কে দায়ী করা হলেও ইসরাইলি সংস্থাটি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে দলটি বলেছে, এনএসও’র প্রযুক্তির লাইসেন্স রয়েছে কেবলমাত্র অনুমোদিত সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের লড়াই করার জন্য। কোনো পরিস্থিতিতেই এনএসও তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাওকে চিহ্নিত করবে না। সেসব গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজ।
বিবিসি জানিয়েছে, পূর্বে সাইবার অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত ছিল এনএসও গ্রুপ। পূর্বে এনএসও’র তৈরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। সংস্থাটি পরবর্তীতে এনএসও’র লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়ে ইসরাইলি আদালতে পিটিশন করে। মঙ্গলবার (১৪ মে) সেখানে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সারাবাংলা/আরএ