Friday 11 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলকে একীভূত করার চিন্তা


১৫ মে ২০১৯ ১২:৩৪ | আপডেট: ১৫ মে ২০১৯ ১২:৩৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা: সরকারবিরোধী প্রধান দুই জোট ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ ও ‘২০ দল’-কে একীভূত করার চিন্তা করছে দুই জোটের প্রধান শরিকরা। জামায়াতের বিষয়টি ফায়সালা হলে খুব শিগগিরই এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন জোট নেতারা।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, নির্বাচনে ভয়াবহ বিপর্যয়, ফল প্রত্যাখান, শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত, দল ও জোটের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের তিন বিজয়ী প্রার্থীর শপথ এবং আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে দলের চার বিজয়ী প্রাার্থীকে শপথ গ্রহণের অনুমতির পরও বিএনপির নেতৃত্বে সরকারবিরোধী আন্দোলনে থাকতে চায় ২০ দলীয় জোটের বেশিরভাগ শরিক। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকরাও আপাতত জোট ভাঙতে চায় না।

বিজ্ঞাপন

তবে একই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা দুইটি জোটকে এই মুহূর্তে আলাদা রাখা অযৌক্তিক মনে করছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন, নির্বাচনের আগে জরুরিভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। সে সময়ের বাস্তবতায় বিষয়টি ঠিক ছিল। কিন্তু এখন আলাদ দু’টি জোট রাখার কোনো প্রয়োজন নেই। সময় এসেছে দুই জোটকে একীভূত করে সরকারবিরোধী বৃহত্তর জোট গড়ে তোলার।

তাছাড়া বিএনপির নেতৃত্বে আলাদা দুইটি জোট থাকায় দুই জোটের শরিকদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। যেকোনো ধরনের ব্যর্থতার দায় একে অন্যের কাঁধে চাপানোর চেষ্টা করছেন। এতে করে পরস্পরের মধ্যে সন্দেহ-সংশয় বাড়ছে। কেউ কেউ জোট ছেড়ে যাচ্ছেন। কেউ বা দিচ্ছেন জোট ছাড়ার আলটিমেটাম।

এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি, গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য’র সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং ২০ দলীয় জোটের নিবন্ধিত ও অপেক্ষাকৃত বড় দলগুলো নিয়ে সরকারবিরোধী বৃহত্তর জোট গঠনের কথা চিন্তা করছেন বিএনপি জোটের পুরোনো শরিকরা।

জানা গেছে, এ ধরনের উদ্যোগে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপি। সংকট উত্তরণে তারা এমনটিই চাচ্ছিল শুরু থেকেই। কিন্তু জোটে স্বাধীনতাবিরোধী ‘জামায়াত’ থাকায় ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দকী, আ স ম আবদুর রব ও মাহমুদুর রহমান মান্নাকে এ ব্যাপারে রাজি করানো যাচ্ছিল না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দুই জোটকে একীভূত করার উদ্যোগ নিলে বৃহত্তর স্বার্থে ও কৌশলগত কারণে জোট থেকে স্বেচ্ছায় বের হয়ে যাবে জামায়াত। এক্ষেত্রে জোটগতভাবে না থেকে দলগতভাবে বিএনপির সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক অক্ষুন্ন থাকবে জামায়াতের।

জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছিলাম। আমরা এই ফ্রন্টের পরিধি বাড়াতে চাই। সেক্ষেত্রে দুই জোট একীভূত করার উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবেই নেওয়া যায়, যদি সেখানে জামায়াত না থাকে।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই জোটকে একীভূত করার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব কেউ দেয়নি। তবে বিষয়টির মধ্যে এক ধরনের যৌক্তিকতা আছে। বৃহত্তর স্বার্থে দুই জোটকে একীভূত করা যেতে পারে।’

অবশ্য এ উদ্যোগের বিরোধিতা করার মতো শরিক দলেরও অভাব নেই দুই জোটে। বিশেষ করে ২০ দলীয় জোটের যেসব দল জামায়াতপন্থী, জামায়াতের আদর্শে বিশ্বাসী এবং জামায়াতের অর্থায়নে চলে, তারা এ উদ্যোগের ঘোর বিরোধী। বরং নাম সর্বস্ব ওইসব দল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য বিএনপিকে চাপ দিচ্ছে।

এ ছাড়া কতগুলো যৌক্তিক কারণে দুই জোটকে একীভূত করার বিরোধিতা করছেন ২০ দলীয় জোটের কেউ কেউ। তারা বলছেন, ড. কামাল হোসেন তার চেম্বারের বাইরে যেতে চান না। তার পক্ষে গুলশান কার্যালয়ে এসে বৈঠক করাও সম্ভব না। আবার ২০ দলীয় জোটের অনেক শরিক দল আছে, যাদের পক্ষে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে গিয়ে মিটিং করা সম্ভব না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জানতে চাইলে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই জোট একীভূত করার পক্ষে আমরা নই। আমরা বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের পুনর্গঠন চাই।’

তবে এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহদাত হোসেন সেলিম  সারাবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগে তাড়াহুড়ো করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল। এখন নির্বাচনের ঝামেলা নেই। সরকারবিরোধী বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলকে একীভূত করা যেতে পারে।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

২০ দলীয় জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জামায়াতে ইসলামী জোট বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর