বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্য পূরণ ৬ মাসেই!
৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৮:১৭
জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসেই বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি এক বছরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে অর্থছাড়ও। এ সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে ৬৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। আর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৬০০ কোটি ডলারের। অন্যদিকে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থছাড় হয়েছে ২৬১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এটি ছিল ১৩২ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। তাছাড়া বেড়েছে ঋণ পরিশোধের হারও। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ হিসাব সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব কাজী শফিকুল আযম সারাবাংলাকে বলেন, আমাদের পুরো অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ছয় মাসের মধ্যে তার চেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি এসেছে। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় হিসাব করলে দেখা যাবে প্রতিশ্রুতি কম। এর কারণ হচ্ছে গত অর্থবছর ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে রূপপূর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে রাশিয়ার সঙ্গে একবারেই অনেক বেশি টাকার ঋণ চুক্তি সই হয়েছিল। তাই সেটিকে অস্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। ফলে গত অর্থবছরের হিসাবটা ধরা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, শুরু থেকেই প্রকল্প বাস্তবায়নের দিকে নজর দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার সুফল মিলেছে।
ইআরডি সূত্র জানায়, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে মোট ৬৮৭ কোটি ৩৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৬৭২ কোটি ১২ লাখ ডলার, আর অনুদান ১৫ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতি ১ হাজার ৪২৬ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ঋণ ছিল ১ হাজার ৩৯৭ কোটি ৫২ লাখ ৯০ হাজার ডলার আর অনুদান ২৮ কোটি ৬৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট অর্থছাড় হয়েছে ২৬১ কোটি ৭২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ঋণের পরিমান হচ্ছে, ২৪১ কোটি ৬৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং অনুদান ২০ কোটি ৩ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থাৎ ছয় মাসে অর্থছাড় হয়েছিল ১৩২ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ঋণ ছিল ১১১ কোটি ৯৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার আর অনুদান ছিল ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও ফাবা ইউং-এর প্রধান ফরিদা নাসরিন সারাবাংলাকে বলেন, আমরা আশা করছি বৈদেশিক সহায়তার যে লক্ষ্যমাত্রা ৫৭ হাজার কোটি টাকা সেটি পুরোপুরি অর্জন করতে না পারলেও তার কাছাকাছি যাওয়ায়। গত ছয় মাসে যে অর্জন হয়েছে সেটি অনেক ভাল। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন নীতিমালা ও কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ফলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়ছে। সেইসঙ্গে বাড়ছে অর্থছাড়ও। প্রতিশ্রুতি আদায়ের যে লক্ষ্য তা ছয় মাসেই পুরণ হয়েছে।
বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের পরিমানও। গত ছয় মাসে পরিশোধ করা হয়েছে ৬৫ কোটি ৯০ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এর মধ্যে আসলের পরিমান হচ্ছে ৫২ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং সুদের পরিমান ছিল ১৩ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল ৫৩ কোটি ৭৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে আসলের পরিমাণ ছিল ৪২ কোটি ৫২ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং সুদের পরিমান ছিল ১১ কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
সারাবাংলা/জেজে/এসআই