রূপপুরে বালিশসহ আসবাব কেনায় তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট
২০ মে ২০১৯ ১৪:২৮
ঢাকা: পাবনায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র কেনা এবং সেগুলো ফ্ল্যাটে তুলতে যে খরচ ধরা হয়েছে, সে বিষয়ে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত দায়ের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২০ মে) বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ঈদের ছুটির এক সপ্তাহ পর এ বিষয়ে ফের শুনানি করবেন আদালত। এর আগ পর্যন্ত রিটটি মুলতবি রাখা হয়েছে।
পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প এলাকার গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীর বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র কেনা সংক্রান্ত বাজেটের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধান চেয়ে গতকাল রোববার (১৯ মে) হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন।
আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পরে রিটকারী আইনজীবী সায়্যেদুল হক সুমন বলেন, রূপপুরের আবাসন পল্লীর জন্য বালিশ, রিটে আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছি। এখানে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিষয় রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স রয়েছেন। আদালত আমাদের বক্তব্য শোনার পর অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্য শুনেছেন। সেখানে তিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দু’টি তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি জানিয়েছেন। আদালত তখন বলেছেন, এ তদন্ত প্রতিবেদন আসুক, আমরা দেখি। সে পর্যন্ত মামলাটি মুলতবি থাকুক।
সম্প্রতি রূপপুরের ওই আবাসন পল্লীর জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা ও তা ভবনে তোলায় অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট দায়ের করেন আইনজীবী সুমন।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থাকার জন্য গ্রিন সিটি আবাসন পল্লীতে ২০ তলা উচ্চতার ১১টি ও ১৬ তলা উচ্চতার আটটি ভবন নির্মিত হচ্ছে। এরই মধ্যে আটটি ২০ তলা ও একটি ১৬ তলা ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ২০ তলা ভবনের প্রতিটি ফ্ল্যাটের জন্য একেকটি বালিশ কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৯৫৭ টাকা, আর ভবনে বালিশ ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৬০ টাকা। প্রতিটি রেফ্রিজারেটর কিনতে খরচ দেখানো হয়েছে ৯৪ হাজার ২৫০ টাকা, রেফ্রিজারেটর ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১২ হাজার ৫২১ টাকা। একেকটি খাটের দাম দেখানো হয়েছে ৪৩ হাজার ৩৫৭ টাকা, ফ্ল্যাটে ওঠাতে খরচ দেখানো হয়েছে ১০ হাজার ৭৭৩ টাকা।
একইভাবে টেলিভিশন, ওয়ারড্রোব, বৈদ্যুতিক চুলা, বৈদুতিক কেটলি, রুম পরিষ্কারের মেশিন, ইলেকট্রিক আয়রন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন ইত্যাদি কেনাকাটা ও ভবনে তুলতে ‘অস্বাভাবিক’ খরচ দেখানো হয়েছে।
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর
আসবাবপত্র কেনা গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বালিশ রূপপুর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র