ধান কেনা নিয়েও ‘মসকরা’ করছে সরকার
২০ মে ২০১৯ ১৮:৩৩
কুষ্টিয়া: দেশের অন্যান্য জেলার মতো কুষ্টিয়াতেও ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ধানের দাম কম থাকলেও জেলার কৃষকেরা আশায় ছিলেন সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু সরকারের সেই সিদ্ধান্তও হতাশ করছে তাদের।
কৃষকরা বলছেন, সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের নামে তাদের সঙ্গে ‘মসকরা’ করা হচ্ছে। কারণ কুষ্টিয়া থেকে সরকার মাত্র ১ হাজার ২৪ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ পুরো জেলায় প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে।
কুষ্টিয়ার সবচাইতে বড় ধানের বাজার আইলচারা। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিলারদের মধ্যে ধান কেনার তেমন আগ্রহ নেই। তাই বাজারমূল্য নিম্নমুখী। সব চাইতে ভালো ধান এখানে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭০০ থেকে সাড়ে ৭৫০ টাকায়।
সদর উপজেলার ধানচাষী হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘ধান লাগানো থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি মণে প্রায় খরচ হয়েছে সাড়ে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। সেখানে বাজারে এসে সাড়ে ৫০০ টাকা মণেও ধান বিক্রি করা যাচ্ছে না। তাই আগামীতে আর ধান চাষ করবো না।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩০ হাজার ৩১১ হেক্টর। এই লক্ষ্যমাত্রা পার হয়ে প্রায় ৩০ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিনে ধানের চাষ হয়েছে। যার থেকে উৎপাদন হয়েছে প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান।
জেলা খাদ্য অফিস জানায়, ন্যায্যমূল্য দেওয়ার জন্য সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকার ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার কুষ্টিয়া জেলা থেকে ১ হাজার ২৪ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে প্রতি মন ধানের দাম ১ হাজার ৪০ টাকা ঠিক করা হয়েছে। এই ধান প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকেই কেনা হবে বলেও জানিয়েছেন খাদ্য অফিসের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছে। এই দেড় লাখ মেট্রিক টন ধান আছে কৃষকের ঘরে। আর সরকার ধান কিনছে মাত্র ১ হাজার ২৪ টন, এটা আসলে হাস্যকর। হিসেব থেকেই দেখা যাচ্ছে প্রতি কৃষক ১০/১৫ কেজির বেশি ধান সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারবে না।
কৃষকের পাশে আছে সরকার, ধানের দামের দ্রুত সমাধান হবে: কৃষিমন্ত্রী
কুষ্টিয়ার সচেতন নাগরিক সমাজ সনাক সভাপতি রফিকুল ইসলাম টুকু বলেন, ‘সরকারের ধান কেনার প্রক্রিয়া পুরোটাই একটা মসকরা। কারণ কৃষকের ঘরে যে ধান রয়েছে সরকার তার ১০ ভাগের একভাগও কিনছে না।’ সরকার ধানের যে দাম নির্ধারণ করেছে সেটা যথেষ্ট ভালো, কিন্তু যে পরিমানে কিনছে তা কৃষকের সঙ্গে মসকরা ছাড়া আর কিছু না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সারাবাংলা/এমও