Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় আনা সময়ের দাবি’


২২ মে ২০১৯ ১৭:০০

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িতদের বিচার সম্ভব হয়েছে, কিন্তু পিছন থেকে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

বুধবার (২২ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল ফোরাম আয়োজিত ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও বর্তমান বাংলাদেশ’ আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রী বলেন, ‘কেন সেসময় অ্যাম্বেসি সারারাত খোলা ছিল, কাদের সাহায্যে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা পালিয়ে গিয়েছিল এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে জড়িতদের। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধে কাদের প্রকৃত ভূমিকা কী ছিলো সেটা তদন্ত করতে প্রয়োজনে ‘ফাইন্ডিং কমিটি’ গঠন করা হবে। মুক্তিযুদ্ধকে বানচাল করতে জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাকের মতো আরও অনেকে যুদ্ধের নামে পাকিস্তানের গোয়েন্দা হিসেবে কাজ করেছিল, এদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু হত্যা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘খুনের পরিকল্পনা জিয়া ও তার গং একদিনে করেনি, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া ছিল। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সাক্ষাৎকারে বলেছিল, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে নাকি শিশুপার্ক করে ফেলবে। এর কারণ হচ্ছে পাকিস্তানি আর্মি এখানেই আত্মসমর্পণ করেছিল, বঙ্গবন্ধু এখান থেকেই স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না করলে আজকে বাংলাদেশ পাকিস্তানের মতো আরেকটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা ক্ষমতায় বসে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানিয়ে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে হাল ধরেছেন। তিনি ফিরে না এলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না, জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার হতো না, গঙ্গার পানি পাওয়া সম্ভব হতো না, সীমান্তচুক্তি ও বিনাযুদ্ধে সমুদ্র জয় হতো না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সাম্প্রদায়িক যে বিষবৃক্ষ রোপিত হয়েছিল, শেখ হাসিনা সেটি সমূলে উপড়ে ফেলেছেন। ৭২ সালে রচিত বাংলাদেশের সংবিধানটি আমরা ফিরে পেয়েছি শেখ হাসিনার কারণেই।’

বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে আওয়ামী লীগ ভঙ্গুর দলে পরিণত হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই সিনিয়র নেতাদের হাত করে আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করে ফেলেছিল। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে সভাপতি করা না হলে আওয়ামী লীগ ধ্বংস হয়ে যেতো। তিনি আওয়ামী লীগকে এক সূতায় বেঁধে জনগণের দলে রূপান্তরিত করেছেন। জামায়াতবিহীন আজকের পার্লামেন্ট আমরা পেতাম না, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের আকাশ জয় সম্ভব হতো না- যদি তিনি স্বদেশে ফিরে না আসতেন।’

শেখ হাসিনা এখন বিশ্বনেতা মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা এখন শুধু একজন সাধারণ নেতা নন, তিনি বিশ্বনেতাদের উচ্চতায় নিজেকে নিয়ে গেছেন। তিনি জাতিসংঘে উচ্চকণ্ঠে বলেছেন পারমাণবিক বোমা আর যুদ্ধবাজি বন্ধ করা হোক, পৃথিবীকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তোলা হোক। বিশ্বের দরবারে উনি একজন মর্যাদা ও স্বাধীনচেতা নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতি বঙ্গবন্ধু ধারা ও বঙ্গবন্ধু বিরোধী ধারায় বিভক্ত ছিল। ৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধুবিরোধীরা বাসদ, জাসদ, বিএনপি হয়ে দেশকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টায় ফিরে আসে, কিন্তু শেখ হাসিনা দেশে ফিরে ষড়যন্ত্রকারীদের সকল অপচেষ্টা বানচাল করে দেয়। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। এগুলো সবই সম্ভব হয়েছে উনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ফলে।’

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাশিদ আসকারি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেমন যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে পুনর্জাগরণের চেষ্টা করেছিলেন, তিন বছরে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নযাত্রাকে অব্যাহত রেখেছেন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পিত রূপরেখার মাধ্যমে তিনি দেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন করে যাচ্ছেন, বর্ণবাদী ও ফ্যাসিস্ট চিন্তার উর্ধে উঠে অভিবাসীদের আশ্রয় দিয়েছেন। বিশ্ব যখন নানাভাবে বিভক্ত তখন তিনি মানুষকে ভালোবেসে কাজ করে যাচ্ছেন।’

কবি ও প্রাবন্ধিক অধ্যাপক গাউসুর রহমান বলেন, ‘আজকের দেশের উন্নয়ন, বার্ষিক প্রবৃদ্ধির উন্নয়ন এ সবই শেখ হাসিনার হাত ধরে হয়েছে। উনি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি হতে ফিরে আসেননি, এসেছিলেন রক্তের ঋণ ও আদর্শের ঋণ শোধ করতে। কিন্তু মানুষকে ভালোবেসে উনি এখন চারবারের প্রধানমন্ত্রী।’

বাংলাদেশ কলামিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব ও সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ও বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরি, কলামিস্ট অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাসসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।

সারাবাংলা/ওএম/এমআই  

আ ক ম মোজাম্মেল হক বঙ্গবন্ধু হত্যা বিচার দাবি শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

বিজ্ঞাপন

‘উইকড’ ও ‘রেড ওয়ান’ একই দিনে
২১ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর