Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নুসরাত হত্যায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রস্তুত করছে পিবিআই


২৩ মে ২০১৯ ১৬:৪৪

ঢাকা: মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত হত্যা মামলায় ফেনী আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ মোট ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রস্তুত করতে কাজ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ মামলায় ২১ জন গ্রেফতার হলেও তদন্তে বাকি পাঁচ জনের কোনো সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি সংস্থাটি।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট পিবিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন এই মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) পিবিআই প্রধান বনজ কুমার সারাবাংলাকে বলেন, মামলার তদন্তে যাকেই জড়িত পাওয়া গেছে তাকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। চার্জশিট তৈরির কাজ চলছে।  আইনের চোখে সবাই সমান। কেউ এখানে সুবিধা পাবে না। আইন অনুযায়ী যার বিরুদ্ধেই জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেছে, চার্জশিটে তার নাম রেখেই তা আদালতে জমা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন- নুসরাত হত্যায় মানি লন্ডারিং হয়নি: সিআইডি

পিবিআই তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একজন সারাবাংলাকে বলেন, গত ১০ এপ্রিল নুসরাত হত্যা মামলার তদন্তভার পাওয়ার আগেই সোনাগাজী থানা পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন— আফসার উদ্দিন, কেফায়েত উল্যাহ, আরিফুল ইসলাম, আলা উদ্দিন, নূর হোসেন ওরফে হোনা মিয়া, সাইদুল ইসলাম ও উম্মে সুলতানা পপি।  এদের মধ্যে কেবল মাদরাসা শিক্ষক আফসার উদ্দিন ও ছাত্রী উম্মে সুলতানা পপির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

এদিকে, আগে থেকেই গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা গত ২৪ এপ্রিল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নুসরাত হত্যায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। পাশাপাশি সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন ও সোনাগাজী পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলমও এ ঘটনায় জড়িত বলে তথ্য দেন।

বিজ্ঞাপন

পরে নুসরাত হত্যায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, আফসার উদ্দিন, রুহুল আমিন, মাকসুদুল হক ও উম্মে সুলতানা পপিসহ মোট ১৬ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় পিবিআই। এদের প্রত্যেকেই গ্রেফতার হওয়ার পর জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন- নুসরাত হত্যার একমাস: দ্রুত বিচারের অপেক্ষায় স্বজনরা

পিবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, নুসরাত হত্যায় জড়িত এই ১৬ জনের মধ্যে আট জন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। এর মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজকে নির্দেশদাতা ও দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে আশ্রয়দাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকি পাঁচ জন— উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মণি, শাহাদাত হোসেন শামীম, জাবেদ হোসেন ও সাইফুর রহমান জুবায়ের সরাসরি জড়িত ছিল নুসরাত হত্যায়। তারাই নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন দেয়। আর বাকি আট জনও কোনো না কোনোভাবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পিবিআই।

এর আগে, নুসরাতকে যৌন হয়রানির অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দোলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে কারাগার থেকেই তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। তাতে নুসরাত ও তার পরিবার রাজি না হলে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন অধ্যক্ষ। সেই অনুযায়ী, গত ৬ এপ্রিল নুসরাত তার মাদরাসায় পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে তাকে কৌশলে ছাদে ডেকে নিয়ে যায় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। সেখানে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

অগ্নিদগ্ধ নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই দিন রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নুসরাতের চিকিৎসা চলে। কিন্তু সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় নুসরাত শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

চার্জশিট নুসরাত নুসরাত হত্যা পিবিআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর