তৃণমূল দুর্গে বিজেপির উত্থান
২৩ মে ২০১৯ ১৯:৫৯
ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই বুথ ফেরত সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিপুল বিজয়েল ঈঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। আজ ভোট গণনা শুরু হওয়ার পর থেকে সেটার সত্যতাও লক্ষ্য করা গেছে। অধিকাংশ কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে।
নিজেদের দীর্ঘ দিনের ঘাঁটি মুর্শিদাবাদ এবং মালদহ জেলায় লড়াইয়ে রয়েছে কংগ্রেস। তবে কংগ্রেসের থেকে ভোট শতাংশে সামান্য এগিয়ে থেকেও বামেরা আসনশূন্য হওয়ার পথে পশ্চিমবঙ্গে।
শতাংশের বিচারে ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে জোর চমক দিচ্ছে বিজেপি। এখনো পর্যন্ত যা ভোটপ্রাপ্তির হার, তাতে বিজেপির ভোট ৩৯ শতাংশের আশেপাশে। তৃণমূলের ভোটপ্রাপ্তির হার অবশ্য বেশি, ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি।
ক্ষমতাসীন দলের ভোটপ্রাপ্তির এই হারের বেশ কিছুটা মিল রয়েছে ২০০৯ সালের নির্বাচনের সঙ্গে। সে নির্বাচনে বামেদের বিপর্যস্ত করে তৃণমূল ইঙ্গিত দিয়েছিল, বাংলার ক্ষমতার কেন্দ্রে পরিবর্তন আসন্ন। তৃণমূলের ভোটপ্রপ্তির হার ছিল ৩১ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে সে বার রাজ্যের ২৮টি আসনে তৃণমূল লড়েছিল। বাকি ১৪টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তৃণমূলের তৎকালীন জোটসঙ্গী কংগ্রেস এবং কংগ্রেস সে বার পেয়েছিল ১৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ ভোট। আর বাংলার তদানীন্তন শাসক দল বামফ্রন্টের প্রাপ্ত ভোটের হার সে বার ছিল ৪৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ, এ বার তৃণমূল যে রকম ভোট পেতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলছে, তার কাছাকাছিই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাঁটি দক্ষিণ কলকাতায় প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের মালা রায়। কিন্তু পাশের কেন্দ্র তথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনি ক্ষেত্র ডায়মন্ড হারবারে সকালের দিকে লড়াই হয়েছে। গণনায় বেশ কয়েক বার পিছিয়েও পড়ে অভিষেক। উত্তর কলকাতায় সকাল থেকেই এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় এক নাগাড়েই এগিয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে বিজেপির শান্তনু ঠাকুরকে। ব্যারাকপুরে অর্জুন সিংহের সঙ্গে কড়া টক্কর দীনেশ ত্রিবেদীর। বসিরহাট এবং দমদমে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে থাকছেন তৃণমূলের নুসরত জাহান এবং সৌগত রায়।
রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে গেরুয়া ঝড়ের ইঙ্গিত মিলছে। বাঁকুড়ায় পিছিয়ে রয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এগিয়ে বিজেপির সুভাষ সরকার। বিষ্ণুপুরে এগিয়ে বিজেপির সৌমিত্র খান। পুরুলিয়ায় এগিয়ে বিজেপির জ্যোতির্ময় মাহাত, ঝাড়গ্রামে এগিয়ে বিজেপির কুনার হেমব্রম এবং মেদিনীপুরে এগিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
বেশ কয়েক রাউন্ডের গণনা শেষে সবচেয়ে সংকটে বামেরা। এ রাজ্যের দুই বিদায়ী বাম সাংসদ মহম্মদ সেলিম (রায়গঞ্জ) এবং বদরুদ্দোজা খান (মুর্শিদাবাদ) এখনো পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকতে পারার ইঙ্গিত দিতে ব্যর্থ। যাদবপুরে যে বাম প্রার্থী লড়াই দিতে পারেন বলে মনে করা হয়েছিল, সেই বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও তৃতীয় স্থানে রয়েছেন আপাতত।
সারাবাংলা/এমআই