ঈদে ফিটনেসবিহীন লঞ্চ সাজছে নতুন রূপে
২৪ মে ২০১৯ ১২:৫৩
ঢাকা: ঈদে ঘরমুখো মানুষ রাজধানী থেকে সারাদেশে যাতায়াতের জন্য বাস ও ট্রেনের ওপর বড় ধরনের চাপ থাকলেও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অধিবাসীদের বড় অংশেরই ভরসা নৌপথ। ফলে ঈদে বাড়তি যাত্রীর চাপ থাকে নৌপথেও। আর এ সুযোগটাই কাজে লাগান এক শ্রেণির লঞ্চ মালিক। তারা পুরনো ও ফিটনেসবিহীন লঞ্চকে ঘষামাজা করে ঈদে যাত্রী পরিবহনের উপযোগী করে তোলেন। দেখতে ঝকঝকে তকতকে হলেও এসব লঞ্চের মাধ্যমে তাই নৌ দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।
শুক্রবার (২৪ মে) কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ডকইয়ার্ড ঘুরেও দেখা গেছে এমন চিত্র। সেখানে অচল, পুরনো ফিটনেসবিহীন, ভাঙাচোরা, লক্কর-ঝক্কর লঞ্চকে রঙ করে নতুন রূপে সাজাতে ব্যস্ত দেখা গেছে শ্রমিকদের। এছাড়া, ঢাকার বুড়িগঙ্গার আশপাশের ডকইয়ার্ডগুলাতেও কয়েকশ ফিটনেসবিহীন লঞ্চকে যাত্রী পরিবহনের ‘যোগ্য’ করে তোলার চেষ্টা চলছে। কোনো ধরনের আইনের বিধি-নিষেধ না মেনেই করা হচ্ছে এ কাজ।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের তেলঘাট থেকে মীরেরবাগ পর্যন্ত প্রায় ৩০টি ডকইয়ার্ড রয়েছে। ঈদ সামনে রেখে অনেক মালিক এসব ডকইয়ার্ডে লঞ্চ উঠানোর জন্য দুই-তিন মাস আগে থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছেন। প্রতিটি ডকইয়ার্ডে প্রায় ৭/৮ টির বেশি লঞ্চে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে কাজ।
জাহিদ-৩ লঞ্চের বর্তমান ঠিকাদার আব্দুল রহিম সারাবাংলাকে বলেন, ঈদ সামনে রেখে লঞ্চগুলোকে নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে। মালিক পক্ষ থেকে ২/৩ মাস আগে ঈদের যাত্রী বহনের জন্য লঞ্চগুলো ঠিকাদারি দিয়েছে। ২৫ রোজার আগেই এসব লঞ্চ ডেলিভারি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যে লঞ্চগুলো ঠিকাদারি নেওয়া হয়েছে অধিকাংশ রিকন্ডিশন্ডনে কাজ করতে হচ্ছে। পরিবেশ ভালো থাকলে ২৪ ঘণ্টা কাজ চলে।
গ্লোরী অব শ্রীনগর-২ ডেকোরেটর ঠিকাদার রহমান সারাবাংলাকে বলেন, কাজ খুব দ্রুত গতিতে চলছে। ঈদের আগে রঙের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
বিআইডব্লিউটিয়ের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নিয়াজ মোর্শেদ সারাবাংলাকে জানান, যে লঞ্চগুলো রঙ দেওয়া হচ্ছে সেগুলো রিকন্ডিশন্ড না। পুরাতন লক্কর-ঝক্কর লঞ্চগুলো ঘাটে ভিড়তে পারবে না। কর্তৃপক্ষ নজর রাখছে। ঈদেরও তো বেশি সময় নেই, যে লক্কর ঝক্কর লঞ্চ ঘাটে ভিড়াবে।
তিনি আরও বলেন, ঈদ সামনে রেখে সবাই লঞ্চগুলোতে একটু রঙ করছে, যেন লঞ্চগুলো সুন্দর দেখায়।
বিআইডব্লিউটিয়ের আরেক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, প্রতিদিন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে ৪০টির ও নৌপথে শতাধিক লঞ্চ চলাচল করে। এ লঞ্চগুলোতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন জেলার প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার লোক যাতায়াত করে। আর ঈদের মৌসুমে তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় পঞ্চাশ হাজার। এ সময় অতিরিক্ত যাত্রীর লোভে কিছু অসাধু লঞ্চ মালিক লক্কর-ঝক্কর, চলাচলে অনুপযোগী লঞ্চ সংস্কার ও রঙ করে চাকচিক্য করে তোলেন।
সারাবাংলা/এআই/এনএইচ/জেএএম