‘তিনগুণ’ বেশি দামে পোশাক বিক্রি চিটাগং শপিং কমপ্লেক্সে, জরিমানা
২৫ মে ২০১৯ ২১:১৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের একটি অভিজাত শপিংমলে ক্রেতার বেশে গিয়ে অন্তঃত ১৫টি দোকানে ক্রয়মূল্যের চেয়ে কমপক্ষে তিনগুণ বেশি দামে পোশাক বিক্রির প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসনের বাজার তদারকি দল। দোকানগুলোতে যেমন মূল্যতালিকা ছিল না, তেমনি পোশাকের গায়েও দাম লেখা পায়নি তারা। কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ ক্রেতাদের জিম্মি করে বাড়তি দাম নেওয়ায় ওই শপিংমলের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) দুপুরে নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় ‘চিটাগং শপিং কমপ্লেক্সে’ ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান চালানো হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলাম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী হাসান।
তৌহিদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযান শুরুর আগে আমাদের বাজার মনিটরিং টিমের সদস্যদের ক্রেতার বেশে বিভিন্ন দোকানে পাঠিয়ে পোশাকের দাম যাচাই করানো হয়। তারা দোকানগুলোতে মূল্যতালিকা এবং পণ্যের গায়েও কোনো দাম লেখা দেখতে না পেয়ে আমাদের কাছে রিপোর্ট করে। এরপর আমরা ২০টি দোকানে অভিযান চালায়। এর মধ্যে ১৫টিতে অনিয়ম ও কারসাজি পাওয়া গেছে।’
যেসব দোকানে অনিয়ম পাওয়া গেছে সেগুলো হল- ইয়ং লেডি, নাদিয়া, সমাগম, শাহনাজ স্টোর, লেটেস্ট ফ্যাশন, কিডস কর্নার, ফেমাস বুটিক, বাসন্তী, প্রিটি লুকস, চিটাগাং বুটিকস, আলম ফেব্রিক্স, চাঁদোয়া, লাজুক ফেব্রিক্স, ফিরোজা শাড়ি এম্পোরিয়াম এবং রায়হান’স ফ্যাশন।
তৌহিদুল জানান, এসব দোকানে ভারত থেকে আমদানি করা শাড়ি-লেহেঙ্গা-থ্রি পিছ, বাচ্চাদের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। আমদানি ও কেনার নথিপত্র যাচাই করে দেখা যায়, পোশাকের গায়ে কোড আকারে যে দাম লেখা হয়েছে, এর সঙ্গে নথিপত্রের দামের পার্থক্য প্রায় তিনগুণ।
ড্রেস এর কাগজপত্রের মূল্যের সঙ্গে দোকান মালিকরা কোড আকারে পণ্যের গায়ে ও রেজিস্টারে যে মূল্য লিখে রাখছেন সেটা অযৌক্তিক ও মাত্রাতিরিক্ত। অধিকাংশ কাপড় জাতীয় পণ্যই আমদানি মূল্যের চাইতে অধিক মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। ১৫টি দোকানের একটিতেও পোশাকের গায়ে মূল্য লেখা নেই। দোকানে মূল্যতালিকাও নেই।
অনিয়মের দায়ে চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সর দোকান মালিক সমিতি সভাপতি সহিদুল আলমকে ১ লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়। এছাড়া ২৪ ঘন্টার মধ্যে সকল দোকানে মূল্যতালিকা টাঙানো এবং পোশাকের গায়ে দাম লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার নগরীর প্রবর্তক মোড়ে মিমি সুপার মার্কেটে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেখানেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে মার্কেট কমিটির সভাপতিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
২০১৬ সালেও রমজানে চট্টগ্রাম নগরীতে পোশাকের বাজারে অনিয়ম প্রতিরোধে অভিযানে নেমেছিল জেলা প্রশাসন। সেসময় নগরীর টেরিবাজার, আফমী প্লাজা, মিমি সুপার মার্কেট, সেন্ট্রাল প্লাজা, সানমার ওশান সিটি, আখতারুজ্জামান সেন্টার, ভিআইপি প্লাজা, লাকী প্লাজা, সিঙ্গাপুর মার্কেট, সেন্ট্রাল প্লাজাসহ বিভিন্ন অভিজাত বিপণী বিতানে অভিযান চালানো হয়েছিল।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই