লঞ্চ ছাড়বে সন্ধ্যায়, ভোর থেকেই আসন দখল
১ জুন ২০১৯ ১৬:১৫
ঢাকা: দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদে বাড়ি ছুটেছেন তাদের কাছে লঞ্চের টিকিট সোনার হরিণের মতই। ঈদযাত্রায় টিকিট মিললেও নির্ধারিত আসন পাওয়া যে যথেষ্ট মুশকিল তা লঞ্চ যাত্রীরা কম-বেশি জানেন।
শনিবার (১ জুন ) সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা যায় মানুষের উপচে পড়া ভিড়। লঞ্চের প্লাটফর্ম- ডেক-করিডোর কোথাও পা ফেলার জায়গাও নেই। অনেকে লঞ্চের টিকিট পেলেও নির্ধারিত আসনে বসতে পারছেন না। সন্ধ্যায় লঞ্চ ছাড়বে অথচ আসন পেতে শুক্রবার সেহরির থেকেই লঞ্চঘাটে অবস্থান নিয়েছেন অনেক যাত্রীই। যাত্রীরা জানালেন, আগে থেকে লঞ্চের আসন দখল না করলে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে তাদের।
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় বেশ কয়েকজন যাত্রীর। তাদের একজন সাবরিনা আক্তার। এম ভি সুন্দরবন- ২ লঞ্চের যাত্রী সাবরিনা ৬ বছরের মেয়েকে নিয়ে বরগুনা যাবেন। তিনি বলেন, ‘বাসায় সেহেরি খেয়ে সদরঘাটে এসেছি। এরপর টিকিট কেটে বসে আছি। লঞ্চ ভর্তি হলে ছেড়ে দিবে বলে জানিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। টিকিটে লঞ্চ ছাড়ার সময় সন্ধ্যা ৬টা দেওয়া আছে।
তিনি জানান, গত ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় লঞ্চে দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছে। তাই এবার অনেক আগেই আসন দখল করে বসে আছেন।
সুন্দরবন-২ লঞ্চের কেবিন টিকিট চেকার সুজন সারাবাংলাকে জানান, ঈদযাত্রায় দুপুর একটার পর লঞ্চের সময়সূচি মানা হয়না। যাত্রী ভরে গেলে লঞ্চ ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে যারা আগে আসবেন তারা জায়গা পাবেন। বাকিদের দাঁড়িয়ে যেতে হবে।
তিনি জানান, এবার কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় ধারণ ক্ষমতার বেশী যাত্রী উঠানো হচ্ছে না। মালিক পক্ষও এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
এম ভি পূর্বালী- ৭ এর যাত্রী জয়নাল আবেদীন সিকদার (৫৪) বরিশাল-তুষখালী যাওয়ার জন্য সকাল ৭টা থেকে লঞ্চে সিট দখল করে বসে আছেন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সন্ধ্যার পরে লঞ্চ ছাড়বে তারপরও সকালে আসছি। আগে থেকে সিট দখল না করলে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।’
ভোলাগামী এম ভি তাসরিফ- ৩ এর যাত্রী মো. ফরিদ আহমেদ দুপুর ১২টার দিকে গাবতলী থেকে সদরঘাট টার্মিনালে এসেছেন। বলেন,ফ্লোরে টিকিট নিয়ে বসে আছি বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। অনেক সময় লাগবে লঞ্চ ছাড়তে এই সময়টুকু মোবাইলে গেম খেলে সময় পার করবো ।
এম ভি তাসরিফ- ৩ সুপারভাইজার মহিউদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, সকালের দিকে ঘাটে একটু ভিড় কম থাকে। দুপুরের পর থেকে ভোলা- বরিশাল রুটের লঞ্চগুলো বেশি ছাড়া হয়। তবে ঈদের সময় কোন সিডিউল মানা হচ্ছেনা।
এদিকে অনেক যাত্রী অভিযোগ করেছেন লঞ্চগুলোতে ধারণ ক্ষমতায় বেশি যাত্রী বহন করা হচ্ছে। লঞ্চের কর্মকর্তারা কেন নিয়ম মানছেননা ।
এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিসির ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নিয়াজ মোর্শেদ জানান, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রীবহন করা হচ্ছেনা। আর এখন পর্যন্ত কোন সিডিউল মিস করেনি। তবে লঞ্চে যাত্রী ভরে গেলেই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে যাতে অন্য লঞ্চে ঘাটে ভিড়তে পারে
সদরঘাট থেকে প্রতিদিন ৯০ থেকে ৯৫টি লঞ্চ বিভিন্ন রুটে ছেড়ে যাচ্ছে।
সারাবাংলা/এআই/এমএইচ